বাংলাহান্ট ডেস্ক: তিনি নিজে সিনেমা জগতের মানুষ। অথচ তাঁর জীবন কাহিনি সিনেমার গল্পের চেয়ে কম কিছু না। এক সময় টলিউডের বেশ পরিচিত অভিনেতা ছিলেন হিরণ চট্টোপাধ্যায় (hiran chatterjee)। পরবর্তীকালে যোগ দেন রাজনীতিতে। প্রথমে তৃণমূল, আর এখন বিজেপিতে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে খড়গপুরের বিধায়ক হয়েছেন তিনি।
রাজনীতিতে, বিশেষ করে গেরুয়া শিবিরে আসা ইস্তক হিরণকে নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। মূলত দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিতর্কের জন্যই এত চর্চা তাঁকে নিয়ে। উপরন্তু সদ্য বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছেন হিরণ, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তুলেছেন একরাশ অভিযোগ।
তবে আজ রাজনৈতিক নয়, বরং হিরণের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানব। নুন আনতে পান্তা ফুরায়, এই বাগধারার সঙ্গে ছোট থেকেই পরিচিত সকলে। অভিনেতা বিধায়ক হিরণের এক সময়কার জীবন কেটেছে এই ভাবেই। সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অজানা অতীতের কথা তুলে ধরেন তিনি।
টালির ছাদের মাটির বাড়িতে ছোট থেকে মানুষ হিরণ। বর্ষাকালে সেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ত। গোটা ঘর জল থইথই। ছোট্ট হিরণ অবশ্য বেশ খুশিই হতেন। পড়াশোনা করতে হত না যে! বর্ষাকালে কাদা ডিঙিয়েই স্কুলে যেতেন তিনি। সেখানে মাটিতে চাটাই পেতে পড়ার বন্দোবস্ত ছিল ছাত্রদের। পড়াশোনায় বেশ ভাল ছিলেন হিরণ। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বরাবর প্রথম স্থান দখল করে এসেছেন তিনি।
তবে তারপর আরো কঠিন সময় অপেক্ষা করেছিল হিরণের জন্য। আর্থিক দুরবস্থার কারণে বাবা, মা কাউকেই বাঁচাতে পারেননি তিনি। সরকারি হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে বিনা চিকিৎসায় প্রাণত্যাগ করেছিলেন হিরণের বাবা। তার তিন মাসের মাথায় আবার এক ধাক্কা! প্রয়াত হন তাঁর মাও।
সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন হিরণ। ঠিক ভাবে খাওয়া টুকুও জুটত না রোজ। স্বাভাবিক ভাবেই পড়াশোনাতেও গাফিলতি হয়েছিল তাঁর। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি স্নাতকের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিয়েই পড়াশোনা থেকে কিছুদিনের জন্য নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। তিন বছর কঠোর ব্রহ্মচর্য পালনের পর ফের পড়াশোনায় ফেরেন হিরণ। শেষ করেন স্নাতকের পড়া।