বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসায় জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। প্রাথমিক টেট, স্কুল সার্ভিস কমিশন থেকে শুরু করে কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় ক্রমশ দেওয়ালে পিঠ থেকে চলেছে শাসকদলের। ইতিমধ্যেই একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মন্ত্রী গ্রেফতারি হওয়ার ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে বিরোধী দলগুলি। অপরদিকে, আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে মরিয়া কংগ্রেস (Congress) এবং বিজেপির (BJP) মতো দলগুলি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে একাধিক নেতা কর্মীকে। গতকাল সেই ধারা বজায় রেখেই হুগলি (Hooghly) জেলায় কয়েকশো তৃণমূল কর্মী সমর্থক যোগদান করলেন পদ্মফুল শিবিরে। তবে শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই নয়, গতকালের যোগদান মেলায় হাজির ছিলেন অসংখ্য সিপিএম (Cpim) কর্মীরাও।
উল্লেখ্য, বর্তমানে একের পর এক দুর্নীতির মামলা উঠে আসায় ব্যাকফুটে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে বিগত কয়েকদিনে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘাসফুল ছেড়ে বিজেপির হাত ধরতে দেখা গিয়েছে একাধিক কর্মী সমর্থকদের। অধিকাংশের মুখেই উঠে এসেছে ‘দুর্নীতি’ প্রসঙ্গ। কয়েকদিন পূর্বে দলবদল করা এক তৃণমূল কর্মী যেমন জানান, “যেভাবে বর্তমানে একের পর এক দুর্নীতি মামলা সামনে উঠে আসছে, তাতে কারো উপর ভরসা করা যায় না। তৃণমূলের সবাই চোর। সেই কারণেই ওই দলে আর থাকা যাবে না।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে শাসক দলের দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে মরিয়া বিজেপি। সেই সূত্রেই গতকাল হুগলি সাংগঠনিক জেলার একটি অনুষ্ঠানে যোগদান পর্ব আয়োজন করা হয়, যেখানে অসংখ্য তৃণমূল কর্মী সমর্থক বিজেপিতে যোগদান করেন। একইসঙ্গে সিপিএম দল থেকেও বহু মানুষ পদ্মফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। গতকালের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাদের উপস্থিতিতেই গেরুয়া শিবিরের পতাকা হাতে তুলে নেন কয়েকশো কর্মী সমর্থক। এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা জানান, “যেভাবে বর্তমানে দুর্নীতি এবং অপশাসনে ভরে গিয়েছে বাংলা, সেই পরিস্থিতি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করার জন্য সংকল্প নিয়েছে মানুষ। তাই তারা বিজেপির ওপর ভরসা করতে শুরু করে দিয়েছে। আগামী সময়ে বাংলায় ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।”
গতকালের যোগদান পর্বের কয়েকটি দৃশ্য নিজেদের ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে তৃণমূলের দুর্নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তারা লেখে, “তৃণমূলের নৈরাজ্য, অপশাসন, দুর্নীতি এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য এবং দেশ গঠনের সংকল্প নিয়ে হুগলি সাংগঠনিক জেলায় কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শ্রী দিলীপ ঘোষ এবং সাংসদ লকেট চ্যাটার্জীর হাত ধরে কয়েকশো কর্মী তৃণমূল এবং সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন। সকলকে বিজেপি পরিবারে স্বাগতম।”