বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজনীতির আঙিনায় পা রাখতেই বদলে গিয়েছে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rachana Banerjee) জীবন। আগে শরীরচর্চা, ঠাকুর পুজো দিয়ে সকাল শুরু হতো ‘দিদি নম্বর ওয়ানে’র। এখন কোনও রকমে ঠাকুর প্রণাম সেরে বেরিয়ে পড়েন কাজে। জনগর্জন সভা থেকে তৃণমূল (TMC) প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর আমূল পরিবর্তন এসেছে তাঁর জীবনে।
আগে শ্যুটিং, ব্যবসা নিয়েই মূলত ব্যস্ত থাকতেন রচনা। তবে রাজনীতির দুনিয়ায় পা রাখার পর থেকে অভিনেত্রীর ‘রুটিন’ একেবারেই বদলে গিয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে হুগলির তৃণমূল প্রার্থী (Hooghly TMC Candidate) বলেন, ‘এমনিতে একেবারেই ভাত খাই না। তবে এখন প্রচারের কারণে এত জায়গায় ঘুরতে হচ্ছে, কতজনের সঙ্গে দেখা করছি, এর মধ্যে ভাত না খেয়ে আর কোনও উপায় নেই। এই কয়েক মাস প্রায় রোজ দুপুরে ভাত খেয়েছি। তবে ভোট মিটে গেলে অন্তত ১ বছর ভাত খাব না। আবার আমায় রুটিনে ফিরতে হবে’।
আগে নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলতেন রচনা। ঘড়ি ধরে শরীরচর্চা, নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করতেন তিনি। তবে ভোটের সময় ওসব মেনে চলা যায় না। রচনাও তাই নিয়ম ভেঙেছেন। শরীরচর্চা, ডায়েট শুধু নয়, ভোটের ব্যস্ততার কারণে ছেলের সঙ্গেও ঠিক মতো সময় কাটাতে পারেননি অভিনেত্রী। রচনা বলেন, ‘নিজের ছেলের সঙ্গেই ভালো করে দেখা হয়নি। ওকে খুব কম সময় দিতে পেরেছি। এর মধ্যে ওঁর সঙ্গে সেভাবে দেখাই হয়নি’।
আরও পড়ুনঃ ‘কোনও খেলা হবে না’! ‘গায়ে হাত দিলেই পাল্টা ট্রিটমেন্ট’! সাফ হুঁশিয়ারি লকেটের
রচনা জানান, বহুদিন কাজের সূত্রে অন্য জায়গায় থাকতে হয়েছে তাঁকে। কখনও কখনও আবার কাজ থেকে ফিরতে এতটাই রাত হয়ে যেত যে বাড়ি ফিরে দেখতেন যে ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছে। ‘দিদি নম্বর ওয়ানে’র কথায়, ‘মা-ছেলে যে কতদিন একে অপরকে ভালো করে দেখিনি!’ ছেলের পাশাপাশি এই কয়েক দিন বন্ধুদের সঙ্গেও সেভাবে সময় কাটাতে পারেননি তিনি।
রচনা বহুবার বলেছেন, তাঁর জীবনের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছেন তাঁর বন্ধুরা। এবার একই কথা শোনা যায় তাঁর মুখে। তৃণমূল প্রার্থীর কথায়, ‘অরা আমার অনেকটা জুড়ে। ওঁদের সঙ্গে আমি অনেকটা সময় কাটাই। ওঁরাই আমাকে চাপমুক্ত রাখে। তবে এর মধ্যে ওঁদের সঙ্গেও সময় কাটানোর তেমন সুযোগ হয়নি’। তবে প্রচারে কিন্তু পাশে পেয়েছেন বন্ধুদের। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ বলেন, ‘ওঁরা আমার প্রচারে এসেছে। যে যেমন সময় পেয়েছে সেভাবে পাশে থেকেছে। আমি এর থেকে বেশি ওঁদের খাটাতে চাই না। এই গরমের মধ্যে কি বন্ধুদের ওপর অত্যাচার করব নাকি!’
অভিনেত্রী থেকে নেত্রী হয়ে ওঠা চারটি খানি কথা নয়। রোদ, জল, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে মাঠে ময়দানে চষে বেড়াতে হয়। যদিও তাতে কোনও অসুবিধা নেই রচনার। তিনি বলেন, ‘যে কাজে এসেছি, সেটার নিজস্ব দাবি রয়েছে। তাতে যদি গরমে পুড়তে হয় তো হবে। এটা নিয়ে ভাবলে কোনও কাজ ভালো হয় না’। বিগত প্রায় দু’মাস চরম ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে রচনার। রোজ এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত করতে হয়েছে তাঁকে। কাজের থেকে তাই একটু ছুটি পেলেই ছেলেকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে রচনার। তিনি বলেন, ‘প্রাগে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আগে কখনও ওখানে যাইনি। প্রাগের রাস্তায় একা একা হাঁটার ইচ্ছা আছে আমার’।