বাংলা হান্ট ডেস্ক: শিক্ষা (Education) জীবনের ভিত্তি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সারা দেশে (India) বহু নাবালক-নাবালিকা স্কুল জীবনের মাঝপথে লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছে। এদিকে, সারা দেশের যে রাজ্যগুলিতে পড়ুয়ারা দশম শ্রেণির আগে লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছে সেই রাজ্যগুলির তালিকায় ওপরের দিকে থাকা রাজ্যর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। কেন্দ্রীয় সরকারের পিএবি বা প্রোজেক্ট অ্যাপ্রুভাল বোর্ডের পেশ করা তথ্যানুসারে, সারা দেশে মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ড্রপ আউটের হার ১৪.৫ শতাংশ। আর পশ্চিমবঙ্গে মাধ্যমিক স্তরে স্কুল ড্রপ আউটের জাতীয় গড়ের তুলনায় বেশি। সেটি হল ১৫ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় সরকারের পিএবি বা প্রোজেক্ট অ্যাপ্রুভাল বোর্ডের পেশ করা তথ্যানুসারে, এছাড়াও দেশের যে পাঁচটি রাজ্যে স্কুল আউটের হার বেশি সেই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, গুজরাট এবং অসম। উল্লেখ্য যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, তৃণমূল পরিচালিত সরকারের আমলে বাংলার পড়ুয়ারা বাম আমলের তুলনায় বেশি নম্বর পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও বাস্তব পরিস্থিতি করুণ।
দেখা যাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতির পরে বাংলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমশ কমছে। কেননা কিশোর-কিশোরীরা মাঝপথে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিক বনে যাচ্ছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের পেশ করা তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে ১০,৯৮,৭৭৫ জন পরীক্ষার্থী। এরপর ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬,৯৮,০২৮জন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের পেশ করা তথ্যানুসারে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্রদের লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়ার হার বেশি। সূত্রের খবর, ২০২৩ সালে মাধ্যমিক স্তরে নাম নথিভুক্ত করার পর ২ লক্ষ পড়ুয়া লেখাপড়া ছেড়ে দিযেছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে করোনা পরিস্থিতির পরবর্তী সময়ে।
আরও পড়ুন: ঊর্ধসীমা ৩,০০০ টাকা! National Common Mobility Card ইস্যুতে লাগবে না KYC, নিয়ম পরিবর্তন RBI-এর
এখন এটাই দেখার যে, চলতি বছরে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়। অল বেঙ্গল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন বা এবিটিএ জানিয়েছে, বাংলায় বহু স্কুলে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। উল্লেখ্য যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে রাজ্য রাজনীতিতে ঐতিহাসিক পালাবদল ঘটিয়ে হরেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জঙ্গলমহল হাসছে। কেননা বামদের অবিচারের অবসান ঘটছে।
আরও পড়ুন: আম্বানি, মাস্ককে টক্কর দেবে Airtel! স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ডের যুদ্ধে সামিল হলেন সুনীল মিত্তলও
এদিকে সূত্রের খবর, জঙ্গলমহলের স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকার হার যথেষ্ট কম। স্কুল পড়ুয়াদের লেখাপড়া ছেড়ে দেওয়ার কারণ অপরিসীম দারিদ্র। কেন্দ্রীয় সরকার আরও জানিয়েছে, সারা দেশে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়ারা ব্যাপক হারে লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছে দেশের যে ৫টি রাজ্যে সেগুলি হল, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়াণা, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ। এই ৫ রাজ্যে সর্বমোট ৯,৩০,৫৩১ ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। সূত্রের খবর, এই ৫ রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন ছেড়েছে ৫,০২,৭৭১ জন ছাত্র। আর ছাত্রীর সংখ্যা হল ৪,২৭,৭২৮ জন।