বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। বর্তমান যুগে শুধু ছেলেরাই নন একই সাথে মেয়েরাও তালে তাল মিলিয়ে অফিসে ছুটছেন। সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছেন। নিজেদের ইচ্ছে পূরণের জন্য আর বাবা, দাদা কিংবা স্বামীর উপর ভরসা করতে হয় না। বিশেষ করে মেয়েদের বিয়ে হলে নিজেদের শখ, ইচ্ছা, অনিচ্ছা গুলিকে কবর দিয়ে দিতে হয়। কিন্তু আজ এমন এক মহিলার কথা বলবো, যিনি বিয়ের পরই নিজের ভাগ্য সাজিয়েছেন। নিজের হাতে ব্যবসা শুরু করে আজ পার্বতী বিনোদ বছরভর লাখ লাখ টাকা উপার্জন (Success Story) করছেন। তাও আবার মাছের ব্যবসা করেই হয়েছেন বড়লোক। ভাবছেন কীভাবে মাছের ব্যবসা করে এতো বড়লোক হতে পারে তাই না? চলুন জেনে নিই পার্বতী বিনোদের সাফল্যের কাহিনী।
পার্বতী বিনোদের ব্যবসায়িক জগতে (Success Story) প্রবেশ:
পার্বতী বিনোদ হচ্ছেন কেরালার বাসিন্দা। পার্বতীর যখন ১৮ বছর বয়স তখনই তিনি বিয়ে করেন। তবে তার বিয়ে হয়েছিল এমন এক পরিবারে যারা খাওয়ার মাছের ব্যবসা করত। যদিও প্রথম দিকে পার্বতী দেবী ব্যবসা তো দূর মাছ সম্পর্কেই ঠিকভাবে জানতেন না। তবে শ্বশুরবাড়ির দৌলতে সে সবকিছুতে পাকাপোক্ত হয়ে যান। এদিকে পার্বতী দেবীর বিয়ে হয়ে গেলেও মনে মনে তার রয়েছে কিছু করে দেখানোর ইচ্ছা। তিনিও নিজের স্বপ্নগুলোকে নিজের হাতে বুনবেন (Success Story) এই আশায় থাকতেন।
একদিন তিনি ভাবলেন যে তার শ্বশুরবাড়ি যদি মাছের ব্যবসা করতে পারে, তাহলে তিনি কেন নয়। যেমন ভাবা তেমন কাজ। তবে তিনি খাওয়ার মাছ নয় অ্যাকোরিয়ামে থাকা মাছের ব্যবসা করতেন। এই ব্যবসা শুরুর জন্য প্রথমে তিনি মাছ চাষ করা শেখেন। এরপরে অ্যাকুয়াকালচার সম্পর্কেও জ্ঞান অর্জন করেন। তবে গোটা বিষয়টা শিখতে পার্বতী দেবীর অনেকটা সময় লেগে যায়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েন না। বিশেষ করে স্বামীর সাহায্য তাকে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে যায়। ওই বাংলায় একটা কথা আছে না নিজের কাছের মানুষটি পাশে থাকলে বিশ্বজয় করা যায় তেমনি হয়েছে পার্বতী দেবীর সাথে। ধীরে ধীরে এই বিষয়ে তিনি পটু (Success Story) হয়ে ওঠেন। আর শুরু করেন নিজের ব্যবসা।
আরও পড়ুন: জল্পনাই হল সত্যি! অধিনায়ক রোহিত শর্মা হলেন “আউট”, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে বড় ধাক্কা টিম ইন্ডিয়ার
জানা যায় এই ব্যবসা শুরুর পর পার্বতী দেবীকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, “মাছ চাষ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। এমন অনেক সময় হয় যে, ট্যাংকের মধ্যেই মাছ মারা যায়। আর এতে করে ব্যবসায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতিও হয়।” বহুবার এই সমস্যার সম্মুখীন করতে হয় তাকে। তবুও নাছোড়বান্দা পার্বতী হার মেনে নেননি (Success Story)। বরং এই ছোট্ট ছোট্ট বিষয়গুলি থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন এবং আজ বড় মাপের ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন: কিছুতেই মনে পড়ছে না Wi-Fi পাসওয়ার্ড? চিন্তা নেই, একটা ক্লিকেই জেনে নিন এইভাবে
তিনি, মূলত ঘরে অ্যাকোরিয়ামে সাজিয়ে রাখা হয় যে সমস্ত মাছ সেই মাছেরই ব্যবসা করেন। পার্বতী দেবীর ব্যবসার নাম “Daewoo Aquafarm।” মাছ রাখার জন্য তিনি বিভিন্ন ব্যবস্থা করে রেখেছেন। বিশেষত মাছ রাখেন কাঁচের এবং সিমেন্টের ট্যাংকে। এতে করেই মাছ নাকি ভালো থাকে। তবে তিনি শুধু মাছ বিক্রি করেন না একই সাথে এই বিষয় অনেককেই প্রশিক্ষণও দেন। জানা গিয়েছে, পার্বতী দেবী ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য প্রধানমন্ত্রী মৎস যোজনা থেকেও সাহায্য পান। এর মাধ্যমে তিনি মাছের ডিম রাখার জন্য একটি হ্যাচারি তৈরি করেন। পার্বতী দেবীর চাষ করা মাছ আজ বহু দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। গ্রাহকরাও তার কাছে থাকা নিত্যনতুন মাছ নিতে পছন্দ করেন। জানা গিয়েছে, এই মাছ ব্যবসা করে তিনি প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকারও বেশি উপার্জন (Success Story) করেন। অর্থাৎ এই ব্যবসা পার্বতী বিনোদকে লালে লাল করে দিয়েছে।