বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: জীবন আমাদের সামনে সবসময় দুটি অপশন দেয়। তার মধ্যে থেকে কিছু লোক তাদের লক্ষ্যর উদ্দেশ্যে ছুটে চলে এবং নিজের সাফল্যের অবধি পৌঁছে যায়। কিন্তু কেউ কেউ নিজের ব্যর্থতার জন্য প্রতিকূলতাকে দায়ী করতে পছন্দ করে। এসব ব্যাপার জানা সত্ত্বেও মানুষ অনেকসময় সঠিক পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু সঠিক পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয়েছিলেন দিব্যা রাস্তোগির। প্রতিকূলতার মধ্যেও একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন তিনি।
একজন গৃহিণী হয়ে আরামদায়ক জীবনযাপন চালানোর সময় দিব্যা ৪২ বছর বয়সে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার বড় ছেলেকে কলেজে পাঠানোর পর, তার হাতে ছিল অখন্ড অবসর। তখনই তিনি উৎসাহী হয়ে ওঠেন ইন্টেরিয়র ডিজাইনিংয়ের প্রতি। ২০০৪ সাল থেকে শুরু হয়ে তার এই আবেগপূর্ণ শুরু আজ অনেক দূর এগিয়েছে। এখন দিব্যা শুধুমাত্র টার্নকি ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এখনও পর্যন্ত তিনি অনেক ভারতীয় MNC-এর অফিস ডিজাইন করেছে। তার ক্লায়েন্টদের মধ্যে রয়েছে অলিম্পাস, কোয়েন, উইলিয়াম গ্রান্টস অ্যান্ড সন্স, অ্যাবট, প্যানাসনিক, কোরাস, টয়োটার মতো নামিদামি ব্র্যান্ড। তিনি শুধু বড় কর্পোরেট অফিস ডিজাইন করেন না, তিনি বড় গুদাম, পরিষেবা কেন্দ্র থেকে শুরু করে স্বয়ংক্রিয় রান্নাঘর সবকিছুই করেন। সম্প্রতি তিনি অ্যারোসিটি দিল্লিতে ডুকাটির অফিসের পাশাপাশি ৪০,০০০ বর্গফুটের একটি বড় গুদাম ডিজাইন করেছেন। তার কাজ এখন সকল বড় কোম্পানির কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
দিব্যা জানিয়েছেন যে এই জায়গায় পৌঁছনোর রাস্তা একটুও সহজ ছিল না। তার বক্তব্য অনুযায়ী “একটু দেরিতে কর্মজীবন শুরু করায় আমাকে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমি খুব ঐতিহ্যবাহী পরিবার থেকে এসেছি, তাই আমার পারিবারিক দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে আমাকে নিজের জন্য একটি কেরিয়ার গড়ার জন্য কাজ করতে হয়েছিল। ঘরের সব কাজ সেরে ছোট ছেলেকে নিয়ে লেখাপড়া করাতাম। তবে অবশ্যই, আমি এই নিয়ে খুব একটা আফসোস করি না।
এটাও খুব আশ্চর্যজনক যে দিব্যা কখনো মার্কেটিং বা প্রচারের জন্য এক পয়সাও খরচ করেননি। লোকেরা তার নকশা দেখার পরে নিজস্বভাবেই গ্রাহকরা তার কাজের প্রতি ইন্টারেস্টেড হয়েছিল। আজ দিব্যার ডিজাইনিং ফার্মের বার্ষিক টার্নওভার ২৫ কোটি টাকারও বেশি। তার সাফল্য সত্যিই অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো। তিনি প্রমাণ করেছেন যে কোনো কিছু শুরু করার কোনো বয়সসীমা নেই। দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি দিয়ে লক্ষ্যের পেছনে ছুটলে সাফল্য অবশ্যই আপনার দরজায় কড়া নাড়বে।