বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় গণমাধ্যমকে। যে কোনও স্বাধীন, গণতান্ত্রিক সমাজে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা কাম্য। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে বাংলায় যে চিত্র দেখা গিয়েছে তা খানিক উদ্বেগের! সংবাদমাধ্যম (Bengali Media) থেকে শুরু করে সাংবাদিক, সরকারের ‘রোষে’র মুখে পড়তে হয়েছে অনেককে। ব্যতিক্রম নই আমরাও। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলা হান্ট। সম্প্রতি এই নিয়ে মুখ খুলেছেন এবিপি আনন্দের সুমন দে-ও।
সংবাদমাধ্যমের (Bengali Media) ওপর ‘সরকারি খবরদারি’র আঁচ!
সম্প্রতি সুমন স্পষ্ট বলেন, এই বিষয়টি শুধুমাত্র এবিপি আনন্দের সম্পাদকীয় স্বাধীনতার নয়। এই বিষয়টা সার্বিক। সুমনের কথায়, ‘এই প্রশ্নটা সমস্ত চ্যানেল, সংবাদপত্র, নিউজ পোর্টাল, কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের। খবর করতে গিয়ে সরকারের খবরদারির মুখে পড়তে হচ্ছে প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে’। অগ্রজ সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায়কে কোতোয়ালি থানা থেকে সমন পাঠানো থেকে শুরু করে এবিপি আনন্দের সুমন দে-র বিরুদ্ধে এফআইআর করা, সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার নোটিশ পাঠানো- সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার আঘাত নেমে এসেছে সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের ওপর।
সফিকুল ইসলামের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া, শুদ্ধশীল ঘোষের সোনারপুরে ফ্ল্যাটে বিশাল পুলিশবাহিনীর হানা দেওয়ার ঘটনার কথাও ভুলে গেলে চলবে না। এমনকি সংবাদ করার জেরে বাংলা হান্টের সম্পাদক উদয়ন বিশ্বাসকেও রেয়াত করা হয়নি। রাজ্যের একাধিক থানা থেকে সমন পাঠানো হয়েছে তাঁকে। সেই সঙ্গেই প্রায়শয়ই মেল, মেসেজের মাধ্যমেও একাধিক হুমকি পাঠানো হয় আমাদের। এই নিয়ে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি। সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সঙ্গে হওয়া সকল ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলা হান্ট (Bangla Hunt)। এই ঘটনায় সকল সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের পাশে রয়েছি আমরা।
আরও পড়ুনঃ বিকাশ অতীত! আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে লড়বেন বৃন্দা! আসল পরিচয় জানলে মাথা ঘুরে যাবে
মানব গুহ, রোজিনা রহমান, পৌলোমী নাগ- বিগত কয়েক বছরে একাধিক সাংবাদিককে সমন করা হয়েছে। শাসকের ‘রোষে’র মুখে পড়া এই সংবাদমাধ্যমের (Bengali Media) তালিকায় নাম রয়েছে বাংলা হান্টেরও। গত ২৮ আগস্ট এসপ্ল্যানেডের কাছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান কভার করতে গিয়ে যেমন আক্রান্ত হতে হয়েছিল শোভনকে।
বাংলা হান্টের বুম দেখেই শোভনের দিকে আচমকা তেড়ে এসেছিলেন এক যুবক। ‘বিজেপি দালাল’, ‘বিজেপির পা চাটা চ্যানেল’, ‘বিজেপির থুথু চাটা চ্যানেল’ বলে ক্রমাগত আক্রমণ করেছিলেন সেই ব্যক্তি। এর মাঝে একটি অপশব্দও ব্যবহার করেন। বেশ কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডা হওয়ার পর সেখানে এসে হাজির হন আরও বেশ কয়েকজন। এরপর শোভনকে ঘিরে ধরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান তুলতে থাকেন তাঁরা।
এছাড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন গ্রেফতার হয়েছিলেন, সেই সময় আমাদের ৫-৬টি থানায় ডাকা হয়েছিল। ব্যাঙ্কশাল আদালতে এখনও মামলা চলছে। বাংলা হান্টের পাশাপাশি টিভি৯ এবং প্রথম কলকাতাও এই মামলায় পার্টি হয়েছিল। দিনকয়েক আগে আবার খবর করতে গিয়ে এক বেসরকারি হাসপাতালের আইনজীবী ১ কোটি টাকার মামলা করেছেন আমাদের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গেই বাংলা হান্টের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ১০ কোটি টাকার একটি মানহানির মামলা করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতে ‘খবর করতে গিয়ে সরকারের খবরদারি’র সম্মুখীন হতে হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম, সাংবাদিককে। যে কোনও সংবাদমাধ্যমের (Bengali Media) ওপর এমন আঘাত আসা মানেই তা বাংলা হান্টের ওপর আঘাত। স্বাধীন সমাজে স্বাধীনভাবে কাজ করুন সংবাদমাধ্যম, এমনটাই কামনা আমাদের।