১০০ মিটার দূরে ছিটকে পড়ল দেহ, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাংসপিণ্ড! দত্তপুকুর কাণ্ডে কতজনের মৃত্যু?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রবিবারের সকাল যেন দুঃস্বপ্ন। বিকট শব্দে কেঁপে উঠল উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 parganas)। এগরার সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 parganas) দত্তপুকুরে (Dattapukur)।

বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে আশপাশের বাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছুক্ষন আগে পর্যন্তও এই ঘটনায় মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত কোনও খবর পাওয়া না গেলেও বর্তমানে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিস্ফোরণে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতও বহু।

দুর্ঘটনার পর মোট ১১ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বারাসাত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, যাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। অন্যদিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ১ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে একটি ৮ বছরের বালকও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারের পর সোনারপুর! ফের কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে, মিলছে না লক্ষ্মীর ভাণ্ডারও

বর্তমানে বাকীদের চিকিৎসা চলছে। তবে তাদের দেদের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসা চলছে। তবে সকলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দত্তপুকুরের ইছাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোচপুল পশ্চিমপাড়া এলাকায় অবস্থিত বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। এই বাজি কারখানায় মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন এলাকার বহু শ্রমিক কাজ করেন বলে জানা গিয়েছে।

bomb

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই বাজি কারখানা সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে চলছিল। বার বার প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছতেই স্থানীয়রা তাঁদের কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করতে থাকেন। ঘিরে ধরে চলতে থাকে স্লোগান।

আরও পড়ুন: ‘অনেক টাকা দিতে হবে, ভাগ..’, কাটমানি চাইছেন TMC কাউন্সিরের স্বামী? ভাইরাল অডিও ঘিরে তোলপাড়

স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুদিন থেকেই সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে এই বাজি কারখানাটি চলছিল। এই নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকেও জানানো হয়। তবে কোনও সুরাহা হয়নি। এরপর এদিন বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছতেই স্থানীয়রা তাদের দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পুলিশদের ঘিরে স্লোগান চলতে থাকে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সকালে বিকট আওয়াজ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দেখেন, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে চারিদিকে। বিস্ফোরণের পর তা থেকে আগুন লাগে বলে খবর। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঘটনাস্থলের চারদিক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

সামসুল আলম নামে একজনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে কেরামত আলি নামে এক ব্যক্তি অবৈধ বাজি কারখানা চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। চাপা ওই বস্তির মধ্যে অবস্থিত ওই কারখানায় আলু বোমা তৈরী হত বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তার মলমশলাতেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

শুধু তাই নয় গ্রামের অনেক বাড়িতেই অবৈধ ভাবে বাজি তৈরি হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ওদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় কেরামত আলি ও তার ছেলে মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর