বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা (Shubhanshu Shukla) গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে Axiom Mission-4 (Ax-৪)-এর অধীনে তাঁর আন্তর্জাতিক মহাকাশ সফর শুরু করেন। এই মিশনটি আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে NASA, SpaceX এবং Axiom Space-এর সাথে অংশীদারিত্বে উৎক্ষেপণ করা হয়। এমতাবস্থায়, দীর্ঘ ২৮ ঘন্টার সফর শেষে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌঁছেছেন তিনি (Shubhanshu Shukla)। ইতিমধ্যেই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের (ISS) তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানানো হয়েছে, ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টে বেজে ১ মিনিটে মহাকাশ স্টেশনে সফল ভাবে “ডক” করে স্পেসএস্কের ড্র্যাগন ক্যাপসুল। সেই সময়ে ISS প্রশান্ত মহাসাগরের ও পর দিয়ে উড়ছিল বলেও জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, আপনি কী জানেন যে, এই মিশনের মাধ্যমে শুভাংশু শুক্লাকে (Shubhanshu Shukla) মহাকাশে পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারত ঠিক কত টাকা খরচ করেছে? পাশাপাশি, এই মিশনের পেছনে থাকা Axiom Space কীভাবে মহাকাশে সফরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে? বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি।
শুভাংশু শুক্লার (Shubhanshu Shukla) মহাকাশ সফরে কত খরচ হল ভারতের?
Axiom Space: প্রথমেই জানিয়ে রাখি Axiom Space প্রসঙ্গে। Axiom Space হল এমন একটি বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা। যার সদর দফতর হল আমেরিকার হিউস্টনের টেক্সাসে। এই সংস্থাটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর উদ্দেশ্য হল বেসরকারি মহাকাশ ভ্রমণ এবং মহাকাশ গবেষণাকে একটি নতুন মাত্রা দেওয়া। Axiom কেবল ইন্টারন্যাশনাল স্পিড স্টেশনে বাণিজ্যিক মিশন পরিচালনা করে না, বরং ভবিষ্যতে নিজস্ব স্পেস স্টেশন লঞ্চ করারও পরিকল্পনা করে।
Axiom Space কী করে: Axiom এখনও পর্যন্ত একাধিক ঐতিহাসিক মহাকাশ অভিযান সম্পন্ন করেছে। শুভাংশু শুক্লার সাথে Axiom-4 অভিযানটি কোম্পানির চতুর্থ বাণিজ্যিক অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই মিশনের জন্য স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেট এবং ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল ব্যবহার করা হয়। কোম্পানির দলে নাসার প্রাক্তন বিজ্ঞানী, মহাকাশচারী এবং বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন। সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মাইকেল সাফ্রেডিনি নাসার NASA-র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ছিলেন।
কোম্পানির ভ্যালুয়েশন: Axiom Space এখন মহাকাশ সেক্টরে বিনিয়োগের একটি প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে। ২০২১ সালে, কোম্পানির ভ্যালুয়েশন ছিল প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার, যা এখন বেড়ে ১.২৬ বিলিয়ন ডলারে (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা) দাঁড়িয়েছে। কোম্পানিটিকে মহাকাশ প্রযুক্তি এবং গবেষণা সেক্টরে দ্রুত বর্ধনশীল একটি বেসরকারি কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: “অপারেশন সিঁদুর”-এই কুপোকাত পাকিস্তান! ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য এই দেশের শরণাপন্ন শরিফ
ভারতের বিনিয়োগ: Ax-4 মিশনে ভারতের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্য ছিল। এই মিশনে শুভাংশু শুক্লার (Shubhanshu Shukla) আসনের জন্য ভারত প্রায় ৭০ মিলিয়ন (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ₹৫৫০ কোটি) ডলার অর্থ প্রদান করেছে। এই পরিমাণ অর্থ প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে, চিকিৎসা সহায়তা, বিমা এবং অন্যান্য লজিস্টিক খরচও বহন করছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার মধ্যেও শক্তিশালী ভারতের অর্থনীতি! RBI-র বুলেটিনে মিলল বড় তথ্য
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, Axiom Space-এর পরবর্তী বড় লক্ষ্য হল এই দশকের শেষ নাগাদ নিজস্ব কমার্শিয়াল স্পেস স্টেশন চালু করা। যা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনকে প্রতিস্থাপন করবে। এটি মহাকাশে বাণিজ্যিক উপস্থিতি এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে একটি নতুন দিকনির্দেশ করবে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।