আদানি ইস্যুর পর ব্যাঙ্কে রাখা টাকা কতটা নিরাপদ? বিজ্ঞপ্তি জারি করল RBI

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে সর্বত্র যে ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে তা হল আদানি-হিন্ডেনবার্গ ইস্যু (Adani-Hindeburg Issue)। সমগ্ৰ বিশ্ব রীতিমতো তাকিয়ে রয়েছে এই ঘটনার দিকে। ইতিমধ্যেই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের পরেই লাফিয়ে লাফিয়ে কমেছে আদানি গ্রূপের অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলির শেয়ারের দাম। তার সাথে পাল্লা দিয়ে পতন ঘটছে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির (Gautam Adani) মোট সম্পদও। গত সপ্তাহেও বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিলেন আদানি। কিন্তু, প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী আদানির মোট সম্পদের পরিমান কমে হয়েছে ৫৯ বিলিয়ন ডলারে। আপাতত তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন ২১ নম্বর স্থানে।

এদিকে, আদানি কাণ্ডের জেরে ব্যাঙ্কে রাখা টাকা কতটা নিরাপদ রয়েছে সেই প্রসঙ্গে তীব্র দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সাধারণ আমানতকারীরা। এমতাবস্থায়, সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে কোটি কোটি আমানতকারীদের ভরসা জোগাতে ইতিমধ্যেই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করল ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank Of India)। ওই বিজ্ঞপ্তিতে RBI স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, বর্তমানে দেশের ব্যাঙ্কগুলি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত সমগ্ৰ পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গত সপ্তাহ থেকেই আদানি গ্রূপের সংস্থার এহেন পতনের জেরে দুশ্চিন্তা বাড়ে সাধারণ মানুষের। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাঙ্কের পাশাপাশি আদানি গ্রূপকে বড় অঙ্কের ঋণ দিয়েছে একাধিক দেশীয় ব্যাঙ্ক। আর এর ফলেই আদানি গ্রূপের পতন অব্যাহত থাকলে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সাধারণ মানুষের আমানত কতটা সুরক্ষিত থাকবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান আমানতকারীরা। যদিও, এবার এই পরিস্থিতি সামলাতে এবং আমানতকারীদের সাহস জোগাতে গত শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে RBI।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আরও জানিয়েছে যে, ‘‘সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলিতে একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশীয় ব্যাঙ্কগুলির সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তার একটা চিত্র উঠে এসেছে। তবে, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিয়ন্ত্রক এবং নজরদার হিসাবে RBI ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের উপর প্রতিনিয়ত নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।’’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রীতিমতো মহাপতন পরিলক্ষিত হয়েছে আদানি গ্রূপের সাম্রাজ্যে। গত এক সপ্তাহে দেশের বাজারে বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থা। এমতাবস্থায়, গত বুধবার আদানি এন্টারপ্রাইজের ২০ হাজার কোটি টাকার FPO স্থগিত করার কথাও ঘোষণা করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত বাজারে আদানি গ্রূপের সম্পদের পরিমান ১০ হাজার কোটি ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকারও বেশি কমে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর