বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস মেনে বাংলাদেশেই আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সোমবার রাতেই সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ বাংলাদেশের (Bangladesh) উপকূলে আঘাত করে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি উপকূলে আঘাত করে রাতের দিকে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রবল ঝড়বৃষ্টি চলছে সে দেশে। এখনও পর্যন্ত ১০ জন মারা গিয়েছেন ঝড়ের তাণ্ডবে। সোমবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয় ঝড়বৃষ্টি। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে ঝড়ের তাণ্ডব।
ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগ সোমবার সন্ধ্যায় এবং মূল কেন্দ্রটি রাতে উপকূলে আঘাত করে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি ভোলার উপর দিয়ে যায়। সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারা দেশে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কুমিল্লায় ৩ জন, ভোলায় ২ জন, নড়াইলে ১ জন, বরগুনায় ১ জন এবং সিরাজগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দড়িকান্দি এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বড় একটি গাছ উপড়ে পড়ে। তারপরই বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায় ঝোড়ো বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি চলছে। উপকূলের ১৫টি জেলার নদ–নদীর জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি। ভোলার দৌলতখানা পুর এলাকায় খাদিজা বিবি নামে এক বৃদ্ধা গাছ চাপা পড়ে মারা যান। ভোলাতেই আর এক জন মারা যান চারফ্যাশন উপজেলায়। সেখানে দু’জন বাইকে করে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই তাঁদের উপর একটি প্রকাণ্ড গাছ ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাইক চালকের। আরোহী গুরুতর আহত হন।
বরগুনা জেলায় একটি বাড়ির উপর গাছ ভেঙে পড়ে। ওই সময় ঘরে থাকা আমিনা খাতুন নামে এক বৃদ্ধার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। গাছের ডাল ভেঙে পড়ে নড়াইলের মর্জিনা বেগম গুরুতর আহত হন। স্থানীয়েরা তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ঘরের উপর গাছ উপড়ে পড়ে সন্তান-সহ স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাত ১১টা নাগাদ হেসাখাল ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতদের নাম নিজামউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী শারমিন আক্তার এবং তাঁদের চার বছরের শিশুসন্তান নুসরত। অন্য দিকে, সিরাজগঞ্জ সদরের সয়দা ইউনিয়নের মোহনপুর এলাকায় সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের জেরে নৌকাডুবিতে মা ও ছেলের মৃত্যু হয় বলে জানা যাচ্ছে।
ঘূ্র্ণিঝড় সিত্রাং প্রভাব ফেলেছে বাংলাদেশের মোট ১৩টি জেলায়। ওই সব জেলায় আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। উপকূলবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রম করার সময় উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের বেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার ছিল বলে জানা যাচ্ছে।