বাংলা হান্ট ডেস্ক: আজ ২৩ জানুয়ারি সারা দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Subhash Chandra Bose) জন্মদিবস। তাঁকে দেশপ্রেমিক, বীরযোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামী যে নামেই সম্বোধন করুন না কেন, বাংলায় শব্দের ভাণ্ডার ফুরিয়ে যাবে। আপামর দেশবাসী জানে তাঁর একের পর এক সংগ্রামের গল্প। ভারত মায়ের অমর সন্তান তিনি। ভারতের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নেতাজির অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সংগ্রামের কথা সকলেই জানেন, কিন্তু এটা কি জানেন সুভাষ কিভাবে হয়ে উঠেছিলেন সকলের কাছে নেতাজি?
কিভাবে হয় উঠেছেলিন সুভাষচন্দ্র (Subhas Chandra Bose) থেকে নেতাজি:
ছোট থেকেই সুভাষের (Subhash Chandra Bose) দেশের প্রতি অগাধ ভালবাসা। তিনি দেখতেন পরাধীন ভারতে দেশের মানুষদের উপর ইংরেজ সরকার ঠিক কিভাবে অত্যাচার চালাচ্ছে। আর এই অন্যায় তিনি মেনে নিতে পারতেন না। তরুণ বয়স থেকেই তিনি দেশ স্বাধীনের নানা স্বপ্ন দেখতে থাকেন। মানুষদের উপর অত্যাচার বন্ধ করার পথ খুঁজতেন। বড় হওয়ার সাথে সাথে দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসা যেন বাড়তে থাকে।
নেতাজি (Subhash Chandra Bose) ভেবেছিলেন, এমন এক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাঁর সৈন্যদল স্বাধীনতা অর্জনের জন্য লড়াই করতে পারবে। কিন্তু সেটা দেশ থেকে সম্ভব নয়। তাই দেশে নয় দেশের বাইরে গড়ে তুললেন আজাদ হিন্দ বাহিনী। জানা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, জাপানের সাহায্যে সিঙ্গাপুরে আজাদ হিন্দ বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন তিনি। যদিও সিঙ্গাপুর প্রথমে জাপান সরকারের অধীনে থাকলেও, পরবর্তীতে তা নেতাজির আজাদ হিন্দ সরকারের অধীনস্ত হয়।
আরও পড়ুন আরজি করের নির্যাতিতার দেহে অন্য মহিলার DNA কীভাবে? ‘ফাঁস’ করলেন খোদ বিচারক
সৈন্যবল প্রয়োজনের উপলব্ধি: দিন যতদিন যেতে থাকে ততই নেতাজি উপলব্ধি করেন দেশে থেকে কখনই ভারতের স্বাধীন সূর্যোদয় ঘটানো সম্ভব নয়। তাই দেশকে স্বাধীন করতে ব্রিটিশ বিরোধী শক্তিধর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করলেন। মূলত দেশকে স্বাধীন করতে তিনি জার্মানি গিয়েই প্রথম কাজ শুরু করেন। সেখানে বার্লিনে পূর্ব পরিচিত দুই যুবসমাজ এবং ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে তৈরি করলেন একটি ভলেন্টিয়ার। আসলে সুভাষচন্দ্র (Subhash Chandra Bose) বুঝতে পেরেছিলেন দেশকে স্বাধীন করতে গেলে সবার আগে প্রয়োজন সৈন্যবল।
আরও বিরাট সৈন্য বল তৈরি করার জন্য জার্মানির হাতে বন্দি থাকা ভারতীয়দেরকেও বোঝাতে শুরু করেন। যদিও এই সময় নেতাজিকে কম সমস্যার মুখে পড়তে হয় নি। কারণ সেই সময় বন্দি ভারতীয়রা সুভাষকে (Subhash Chandra Bose) তাঁদের নেতা হিসেবে মানতে নারাজ ছিলেন। তবে তাতে থেমে যাননি নেতাজি। প্রতিনিয়ত বোঝাতে থাকেন তাঁদের। বিশেষ করে, সুভাষের দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশকে স্বাধীন করার প্রচেষ্টা দেখেই রাজি হয়ে যান সকলে। সেই সাথে দেশকে স্বাধীন করার জন্য তাঁরাও হয়ে ওঠেন নেতাজির অন্যতম অঙ্গ।
আরও পড়ুন:এবার আর শীত পড়বে না দক্ষিণবঙ্গে! বিদায়ের দিনক্ষণ জানিয়ে দিল আবহাওয়া দপ্তর
এক থেকে একাধিক সৈন্য নিয়ে দেশকে স্বাধীন করতে তৈরি হল ইণ্ডিয়ান ন্যাশানাল আর্মি। যদিও দল গঠনের প্রথম ধাপ ফ্রি ইণ্ডিয়ান সেন্টার তৈরি হয়েছিল বার্লিনে। পরবর্তীতে গঠিত হল ইন্ডিয়ান লিজন। দেশের প্রতি তাঁর ভালবাসা খুব অল্প দিনের মধ্যেই সৈন্যদের অনুপ্রাণিত করতে থাকে। সেই সাথে সকলকে উৎসাহিত করার ধরন, প্রতিটি বক্তব্য ধীরে ধীরে সুভাষকে সকলের কাছে করে তোলে নেতাজি। আর সেই থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন সারা দেশের নেতাজি। সেই সাথে শোনা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুতের বেশ কিছু লেখাতেও সুভাষকে নেতাজি হিসেবেই উল্লেখ করা। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Subhash Chandra Bose) মত দেশ সংগ্রামী এই বিশ্বে কদাচিৎ আসেন।