বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ব্রাজিলের (Brazil) আমাজন অরণ্যের কোকোমা উপজাতির এক তরুণীর। খবর এসেছিল তাঁর থেকে সংক্রামিত হয়েছেন আরও সাত জন। প্রত্যন্ত অরণ্যে উপজাতিদের মধ্যে কী করে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়াল, তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগে ছিল ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আজ, শুক্রবার ফের জানা গেল, আরও প্রত্যন্ত অরণ্যে বাস করা, ইয়ানোমামি নামের এক উপজাতির এক কিশোর আক্রান্ত করোনাভাইরাসে! (corona virus) ঘটনায় কার্যত হতবাক ব্রাজিল সরকার।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ সারা বিশ্বে মহামারীর আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ে জোর দিয়েছে সকলে। মানুষের সঙ্গে মানুষের সামাজিক দূরত্ব বাড়লেই সংক্রমণ আটকানো যেতে পারে বলে জানিয়েছে হু (WHO)। কিন্তু এই সমস্ত উপজাতির মানুষগুলির পক্ষে দূরত্ব রক্ষা করা কার্যত অসম্ভব। সামাজিক ভাবে যৌথবদ্ধ জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গেই কোনও ভাবে খাপ খায় না দূরত্বের ধারণা। মনে করা হয়েছিল, বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন এই সমস্ত উপজাতির মধ্যে সংক্রমণ পৌঁছতে পারবে না, ফলে তাঁদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা অতটাও জরুরি হবে না।
কিন্তু এ ধারণাকে ভুল প্রমাণ করল ইয়ানোমামির ঘটনা। জানা গেছে, ওই উপজাতির করোনা আক্রান্তের বয়স ১৫। আপাতত উত্তর ব্রাজিলের বোরাইমার রাজধানী বোয়া ভিস্তার এক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে। তার থেকে অন্য কেউ সংক্রামিত হয়েছে কিনা, এখনও জানা যায়নি।
ব্রাজিলের আমাজন অরণ্য ও সংলগ্ন অঞ্চলে এখনও প্রায় ৮ লক্ষ আদিবাসীদের বসবাস। অন্তত ৩০০টি পৃথক উপজাতি রয়েছে সেখানে। ইয়ানোমামি সেগুলিরই একটা। এই উপজাতির অন্তর্গত প্রায় ২৭ হাজার মানুষ রয়েছেন, যাঁরা ওই এলাকায় বাস করেন। ইযানোমামির মানুষদের সারা পৃথিবী চেনে, মুখে নানারকম রং দিয়ে আঁকার জন্য এবং প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের চামড়া ফুটো করে অদ্ভুত সব গয়না পরার জন্য।
বাইরের জগতের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক প্রায় নেই এই উপজাতির মানুষদের। হয়তো কখনও কখনও কেউ ছবি তুলতে বা ডকুমেন্টরি শ্যুট করতে যান সেখানে। তাহলে কি তেমনই কারও মাধ্যমে অসুখ পৌঁছল অরণ্যে? এই প্রশ্নটাই এখন ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছে, সংক্রমণের খবর পাওয়ার পরেই ওই এলাকার উপজাতির মানুষগুলিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে সব রকম ভাবে।
কিন্তু ইয়ানোমামি উপজাতির কিশোর কীভাবে আক্রান্ত হল, তা এখনও স্পষ্ট নয় কারও কাছেই। কিন্তু উপজাতির অন্দরে সংক্রমণ চারিয়ে যাওয়ার ফল অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকে।