২২ নয়, মাত্র ১২ ঘন্টাতেই হাওড়া থেকে যাওয়া যাবে দিল্লি! ট্রেন ছুটবে ১৬০ কিমি বেগে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমানে হাওড়া থেকে রাজধানী শহর দিল্লি পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ২২ ঘন্টা। যদিও, রাজধানী এক্সপ্রেসের সৌজন্যে এই সময় অনেকটাই কমে ১৬ ঘন্টায় এসে দাঁড়িয়েছে। তবে, এবার ১৬ ঘন্টাও নয়, “মিশন রফতার”-প্রকল্পে হাওড়া ও দিল্লির দূরত্ব ১২ ঘণ্টায় অতিক্রম করার পরিকল্পনা করছে রেল। পাশাপাশি, এই প্রকল্পের আওতায় নয়াদিল্লি-হাওড়া এবং নয়াদিল্লি-মুম্বই রুটে ট্রেনের সর্বাধিক গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটারে নিয়ে যাওয়ার কাজও দ্রুত শেষ করতে চাইছে রেল।

এমনিতেই এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও দেরি করতে নারাজ রেল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, চলতি বছরের মধ্যেই এই কাজ শেষ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পূর্বা এক্সপ্রেসে এখন হাওড়া থেকে দিল্লি যেতে বা দিল্লি থেকে হাওড়ায় আসতে ২২ ঘণ্টা সময় লাগে। এদিকে, হাওড়া থেকে নয়াদিল্লি যেতে রাজধানী এক্সপ্রেসের গড়ে ১৫-১৬ ঘণ্টা লাগে। তবে, নতুন এই পরিকল্পনা সফল হলে হাওড়া ও নয়াদিল্লির ট্রেন-দূরত্ব কমিয়ে মাত্র ১২ ঘণ্টায় নিয়ে আসা যাবে বলে জানাচ্ছে রেল।

এদিকে, উন্নত মানের ট্রেন নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হলেও তা এখনও শেষ হয়নি বলে রেল সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই যাত্রাকালের সময় কমাতে মুম্বই-দিল্লি রুটে সামনে এবং পিছনে মোট দু’টি ইঞ্জিন ব্যবহার করে পুশ-পুল পদ্ধতিতে রাজধানী এক্সপ্রেস চালানো হচ্ছে। এতে মিলেছে লাভও! সফরের সময় প্রায় দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এতে। এই প্রসঙ্গে রেলকর্তাদের বক্তব্য, দু’টি ইঞ্জিন একত্রে ব্যবহার করলে ট্রেনের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। তবে, হাওড়া-দিল্লি রুটে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হলেও নিয়মিত ভাবে ওই পদ্ধতি ব্যবহার করে ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি।

যদিও, নয়াদিল্লি-মুম্বই এবং নয়াদিল্লি-হাওড়া রুটে ট্রেনের সর্বাধিক গতি বাড়ানোর জন্য প্রায় তিন বছর ধরে নানা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলছে। ওভারহেড কেবল, ট্র্যাক, সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নতি ছাড়াও অত্যাধুনিক “রোলিং স্টক” বা ট্রেন নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষাও সেই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পাশাপাশি, এর মধ্যে পূর্ব রেলের আওতায় থাকা প্রায় ২৬০ কিলোমিটার রুটে ট্র্যাক এবং ওভারহেড কেবলের পরিকাঠামো তৈরির কাজ মোটামুটি সম্পূর্ণ হয়েছে। আপাতত, সম্প্রতি সিগন্যালিং পরিকাঠামো সংস্কারের জন্য টেন্ডার বা দরপত্র ডাকা হয়েছে। রেলের তরফে বিভিন্ন সাবস্টেশন নির্মাণের কাজও সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। এছাড়াও, ওভারহেড কেবলে বাড়তি বিদ্যুৎ জোগান দিতে ডিভিসি এবং অন্যান্য বিদ্যুৎ সংস্থার সঙ্গে চুক্তির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে আগেই।

train 12

এদিকে, চলতি বছরের শেষে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস পাওয়া গেলে সেই ট্রেন যাতে চালানো যায়, তার প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে পূর্ব রেল। এছাড়াও, নয়াদিল্লি-মুম্বই এবং হাওড়া-নয়াদিল্লি এই গুরুত্বপূর্ণ দু’টি রুটের ব্যস্ত অংশে দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন ব্যবস্থা ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি, পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট অন্য সব রেলই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন-সেট মিললে আলাদা ভাবে কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন তেমন পড়বে না বলেই মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ। সেক্ষেত্রে, অতি দ্রুত গতির ট্রেন-সেট চালিয়ে পরীক্ষা করলে পুরো ব্যবস্থার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা সম্ভব হবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর