বাংলা হান্ট ডেস্ক : পুরসভার গাড়ির বিল দেখে চোখ কপালে উঠছে মানুষের। গত ন’মাসে এগরা পুরসভার (Egra Municipality) গাড়ির বিল ২২ লক্ষ ১১ হাজার টাকা। শুধু বাল্ব কিনতেই নাকি খরচ হয়েছে ১৫ লক্ষ ৪ হাজার টাকা। জেরক্স আর প্রিন্টিং খাতে চলে গিয়েছে আরও ৪ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। মশা মারার তেল কিনতে খরচ হয়েছে সাত লক্ষ টাকা। গত এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ন’ মাসের এই খরচের অংক দেখে ভিরমি খাচ্ছে মানুষ। গত বৃহস্পতিবার পুরসভায় বাজেট বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে পুরসভার কর্মী ও আধিকারিকরা আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেন। সেই রিপোর্ট দেখে তাজ্জব সকলে।
রাজ্যের সব পুরসভার মতোই এগরা পুরসভাতেও আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার নানা প্রকল্পে ঠিকমতো টাকা দিচ্ছে না। যে কারণে শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় সার্বিক উন্নয়নের কাজকর্ম বাধা পাচ্ছে। এই অবস্থায় পুরসভা নিজস্ব তহবিলের টাকা বেহিসাবি খরচ করছে বলে অভিযোগ সামনে আসছে। বাজেট বৈঠক উপলক্ষে আয়-ব্যয়ের তথ্য সামনে আসতেই সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, পুরসভায় একমাত্র চেয়ারম্যান স্বপনকুমার নায়ক সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। আর কেউ সরকারি গাড়ি পান না। যদিও পুরসভার কাজে সুডার অফিস কিংবা তমলুক সিএমওএইচ অফিস, কাঁথি কোর্টে যেতে হলে তখন গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। কিন্তু, দৈনিক গাড়ি ভাড়ার প্রয়োজন হয় না। তাহলে গত ন’মাসে কিভাবে গাড়ির বিল ২২ লক্ষ ১১ হাজার টাকা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
হিসাব বলছে, গড়ে প্রতিদিন এগরা পুরসভা ৮১৯১ টাকা গাড়ির বিল মিটিয়েছে। এছাড়া রোলার, ট্রাক্টরের মতো গাড়ির জন্য ১৭ লক্ষ ২৭ হাজার ৩১৯ টাকার বিল হয়েছে। শুধু গাড়ি নয়, বিরাট অংকের টালা খরচ হয়েছে বাল্ব ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কিনতেও। কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০২২ সালে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরসভার ১৫ লক্ষ ৪৯ হাজার ২২০ টাকা মূল্যের ওই সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। অথচ, তার আগে ২০২১-২২ সালে ১৪ লক্ষ ৮২ হাজার ৭৮ টাকা মূল্যের ওই সামগ্রী কেনা হয়। এক বছরের মধ্যে আবারও সাড়ে ১৫ লক্ষ টাকার কী সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। এছাড়া, ৬ লক্ষ ১৭ হাজার ১৬৬ টাকা দিয়ে পুরসভা এলাকার এলইডি লাইটের বিদ্যুতের বিল মেটানো হয়েছে।
মশা মারার তেল ও যন্ত্রপাতি কিনতেই ন’মাসে পুরসভা খরচ করেছে ৬ লক্ষ ১৯ হাজার ১৯৩ টাকা। প্রিন্টিং-জেরক্স বাবদ ৪ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা খরচ করেছে পুরসভা। আয়-ব্যয়ের রিপোর্ট দেখে পুরসভার বিরোধী দলনেতা অম্বিকেশ মাইতি বলেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষের স্পষ্ট বক্তব্য সামনে আসা উচিত। এত বিপুল খরচ কীভাবে হল সেটা তদন্ত হওয়া উচিত।