বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাপ্পি লাহিড়ী (Bappi Lahiri), নামটাই যথেষ্ট সঙ্গীতের একটা যুগকে চেনানোর জন্য। ভারতে ডিস্কো গানের প্রবেশ ঘটেছিল যে মানুষটা হাত ধরে, তিনি নিজে কিন্তু শুধুই গান নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন না। আরো অনেক দিকেই ছিল তাঁর আগ্রহ। যার মধ্যে অন্যতম রাজনীতি।
২০১৪ সালে বিজেপিথে যোগ দিয়েছিলেন সবার প্রিয় বাপ্পি দা। তখন গোটা ভারতে মোদী ঝড় চলছে। রাজনাথ সিংয়ের হাত ধরে ভারতীয় জনতা পার্টিতে পা রাখেন বাপ্পি লাহিড়ী। সে বছরই লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় প্রার্থী করা হয় সুরকার গায়ককে।
তখন বাংলায় বিজেপি এতটা ক্ষমতাশালী ছিল না। কিন্তু বাপ্পি লাহিড়ীকে প্রার্থী করে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিল গেরুয়া শিবির। শ্রীরামপুর থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল তাঁকে। বর্ষীয়ান সুরকারের প্রয়াণে পুরনো দিনের স্মৃতিচারণা করেছেন শ্রীরামপুরের বিজেপি নেতৃত্ব। সেবারে নির্বাচনে গায়কের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন সুবীর নাগ।
স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বাপ্পিদার প্রথম দিনের প্রচারেই কার্যত জনতার ঢল নেমেছিল। মাত্র চল্লিশ মিনিটের রাস্তা যেতেই প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা সময় লেগে গিয়েছিল। প্রচারের কদিন শ্রীরামপুরে দিল্লি রোডের ধারে একটি হোটেলে থাকছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। গভীর রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে তারপর পরের দিনের প্রচারের পরিকল্পনা সারা হত।
বাপ্পি লাহিড়ীর জনপ্রিয়তাই এতটা ছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও এসেছিলেন তাঁর প্রচারে। ‘ডিস্কো কিং’ কে এক ঝলক দেখার জন্য। মোট ২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭১২ ভোট পেয়েছিলেন তিনি। সেবারে ভোটে জিততে না পারলেও মানুষের মন জিতে নিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। তাই আজ এত বছর পরেও সেই দিনটার কথা মনে রেখে দিয়েছে মানুষ।
মঙ্গলবার মধ্যরাতের একটু আগে মুম্বইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান সুরকার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বাপ্পি দা। সোমবারই ছাড়া পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবারই আচমকা তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। পরিবারের সদস্যরা বাড়িতেই চিকিৎসক ডেকেছিলেন। দ্রুত তাঁকে ফের হাসপাতালে আনা হয়।
জানা যাচ্ছে, একাধিক শারীরিক সমস্যা ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর। চিকিৎসক জানান, ‘অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া’র জেরে মৃত্যু হয়েছে সুরকারের। এ ঘটনা একটা বড় ধাক্কা দেশ তথা বাংলার সঙ্গীত মহলে।