বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক অতীতে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যের বহু ‘হাইপ্রোফাইল’ মামলার তদন্ত করছে এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তবে এবার সামনে আসছে সিবিআইয়ের দুর্নীতি-তদন্ত সংক্রান্ত একটি খবর! জানা যাচ্ছে, রাজ্যের (Government of West Bengal) তরফ থেকে সম্মতি না মেলার কারণে থমকে রয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির দুর্নীতি-তদন্ত।
২০১৮ সাল থেকে সম্মতি দিচ্ছে না রাজ্য সরকার (Government of West Bengal)!
বিগত ৬ বছরে ২০০-রও বেশি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে সিবিআই (CBI) দফতরে। তবে প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর ওই সকল অভিযোগের নথি ফাইল বন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে, এগোয়নি তদন্ত! ২০১৮ সাল থেকে রাজ্য সরকার সিবিআইয়ের মামলায় সম্মতি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে সিবিআই সূত্র উদ্ধৃত করে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, দিল্লি স্পেশ্যাল পুলিশ এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের (১৯৪৬) ছয় নং ধারা বলছে, আর্থিক দুর্নীতি সহ অন্য কোনও মামলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সম্মতি ছাড়া এফআইআর দায়ের করা যাবে না। এদিকে ১৯৮৯ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই। ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যের (Government of West Bengal) তরফ থেকে সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে না বলে খবর।
আরও পড়ুনঃ অ্যাকাউন্টে ঢুকবে কড়কড়ে ৬০,০০০! সরকারের এই প্রকল্পে আজ থেকে মিলবে টাকা! কারা পাবেন?
এদিকে রাজ্যে সিবিআইয়ের যে ৪টি দফতর রয়েছে, তার মধ্যে ৩টিই আর্থিক প্রতারণা সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করে। তবে রাজ্যের (Government of West Bengal) তরফ থেকে সম্মতি না পাওয়ার কারণে অভিযোগ আসলেও পদক্ষেপ নিতে পারছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এই বিষয়ে সিবিআইয়ের একজন কর্তা বলেন, ‘বহু কীর্তিমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি অফিসার আমাদের তদন্তকারীদের ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়েছে। আদালতে তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হতো। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে। তবে রাজ্যের তরফ থেকে সম্মতি না মেলায় ওই সব দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি আধিকারিক, কর্মী, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিক, কর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না’।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির ওই কর্তা জানান, এখন কেবলমাত্র সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) এবং হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করতে পারে সিবিআই। এছাড়া বাকি কোনও তদন্তের কাজ এগোচ্ছে না। সব কার্যত থমকে রয়েছে। সিবিআই কর্তাদের দাবি, বিগত কয়েক বছরে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধান করার পর রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরে প্রত্যেক মামলার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। চিঠি দেওয়া হলেও জবাব আসেনি বলে দাবি কেন্দ্রীয় এজেন্সির। রাজ্য সম্মতি তুলে নেওয়ার পর বর্তমানে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, জেল হেফাজতে থাকা বহু রাজ্য সরকারি (Government of West Bengal) কর্মী, আধিকারিকদের বিষয়েও রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়ে সম্মতি মিলছে না। যে কারণে আইন অনুযায়ী আদালত চার্জশিট নিচ্ছে না, শুধু হচ্ছে না বিচারপ্রক্রিয়া। এই বিষয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের একজন কর্তা বলেন, ‘বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সিবিআইও এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল। তাই মন্তব্য করা যাবে না’।