বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিতর্কিত মন্তব্য করে হামেশাই শিরোনামে উঠে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)। বেফাঁস মন্তব্যের জন্য স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছেও ধমক খেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তেমনই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে ‘ঠুসে দেওয়া’ মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন হুমায়ুন। যার জেরে আরও একবার দলের রোষানলের মুখে পড়তে হল তাঁকে।
হুমায়ূনের (Humayun Kabir) জবাবে অসন্তুষ্ট তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি
শুভেন্দু অধিকারীকে ‘ঠুসে দেওয়া’ মন্তব্য করার পর তাঁকে শোকজ নোটিশ ধরিয়েছিল দল। কিন্তু তারপরেও এখনও পর্যন্ত নিজের মন্তব্যে অনড় ভরতপুরের এই তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে শোকজের নোটিশের জবাবে হুমায়ূনের (Humayun Kabir) মন্তব্যে অসন্তুষ্ট তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। তাই এবার মঙ্গলবার তাঁকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার হুমায়ুনের বিরুদ্ধে কি এবার আরও কড়া শাস্তির পথে দল? রাজনৈতিক মহলে এবার তা নিয়েই চলছে জোর জল্পনা।
প্রসঙ্গত ঘটনার সূত্রপাত হয় বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা ‘চ্যাংদোলা’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম বিধায়কদের ‘চ্যাংদোলা করে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা’ দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। বিরোধী নেতার এই মন্তব্যে শুনেই ফুঁসে উঠেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir)।
পাল্টা জবাবে তিনি বলেছিলেন,’আমাকে মারতে এলে রসগোল্লা খাওয়াব নাকি? ঠুসে দেব। ক্ষমতা থাকলে মুর্শিদাবাদে আসুন, দেখে নেব।’ প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার বিধানসভা অধিবেশনের পর মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল বিকেলে। সূত্রের খবর, সেখানেই হুমায়ুন কবীরের এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জানা যায় এরপর তাঁর পরামর্শেই ভরতপুরের বিধায়ককে শোকজ করে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব করা হয় হুমায়ূনের (Humayun Kabir)। গত শনিবার সেই শোকজ নোটিশের জবাব দিয়েছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তবে নিজের মন্তব্যে বরাবরই অনড় তিনি। একইসাথে তিনি জানান তাঁর কাছে দলের আগে ধর্ম।
আরও পড়ুন: এক ধাক্কায় বন্ধ হবে অনেকের রেশন কার্ড! কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার
হুমায়ূনের শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। জানা যায়,এরপর সোমবার বৈঠকে বসেছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যরা। ওই বৈঠকের আগেও সংবাদমাধ্যমে নিজের অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানিয়েছিলেন হুমায়ুন। বৈঠকের পর শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সব রাজনৈতিক দলের কিছু মতাদর্শ আছে। হুমায়ূন এমন কিছু বারবার বলছে যা দলের আদর্শের পরিপন্থী।’
একই সাথে বলা হয়, তিনি যা বলেছেন সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু একজন বিধায়ক একথা বলতে পারে না। শোভনদেব আরও জানিয়েছেন, ‘ও শোকজের জবাবে যা বলেছে তা সন্তোষজনক নয়। ও বলেছে এটা ওর জাতের ব্যাপার। কিন্তু এখানে জাতের কথা আসলে সংবিধানকে অবজ্ঞা করা হয়।’ জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার হুমায়ূনকে ডেকে পাঠানো হয়েছে,সশরীরে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে উপস্থিত থাকার জন্য। তাঁর কথায়, ‘আমরা ওকে কিছু নির্দেশ দেব। সেগুলো মানতেই হবে।’ এখন দেখার দলের নির্দেশ না মানলে কি শাস্তি পান হুমায়ুন?