বাংলা হান্ট ডেস্ক : এই বাংলা নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের, এই বাংলা ক্ষুদিরাম বসুর, এই বাংলা স্বামী বিবেকান্দের, এই বাংলা রবীন্দ্রনাথের। এই বাংলা হল সেই ভাষা, যে ভাষায় ভারতের জাতীয় মন্ত্র রচনা করে বাঙালির মাথা সর্বদা উড্ডীন করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই বাংলার মাটিই বারবার রক্তাক্ত হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বুকের রক্তে। সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশের উদ্যত বন্দুকের সামনে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তমলুকের বৃদ্ধা মাতঙ্গিনী হাজরা। অথচ আজ সেই বাংলাতেই দেখা গেল ভারতের গর্বের ‘জন-গণ-মন অধিনায়কের’ চূড়ান্ত অপমান (Humiliation of the National Anthem)।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দুই তরুণী অত্যন্ত আপত্তিজনক ভাবে গাইছেন ‘জন-গণ-মন’। ক্যামেরার সামনে বসে রয়েছেন তাঁরা। বিদ্রুপের সুরেই গাইছেন জাতীয় মন্ত্র। এক তরুণীর হাতে আবার রয়েছে সাদা একটি বস্তু। খুব সম্ভবত সেটি একটি সিগারেট। অপর তরুণী ওই তরুণীর হাত থেকে ওই বস্তু কেড়ে নিয়ে বলতে থাকেন ‘ওই ফ্ল্যাগ! ওই ফ্ল্যাগ’। এরই সঙ্গে পতাকা ওড়ানোর ভঙ্গিতে হাত নাড়তে থাকেন।
অর্থাৎ কুৎসিত ভাবে জাতীয় সংগীত গাইবার সঙ্গে সিগারেটের মতো দেখতে বস্তু নিয়ে জাতীয় পতাকা ওড়াচ্ছেন তাঁরা। অপর তরুণীর গলায় তখনও চলছে জাতীয় সংগীতের নামে বিদ্রুপ। একজন তো আবার অতিরিক্ত মজা পেয়ে হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি দিতে শুরু করলেন। এই দুই তরুণীর মধ্যে একজনের নাম রীশিতা দাস। দুই তরুণীর নামে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছেন হাইকোর্টের আইনজীবী আত্রেয়ী হালদার
ভিডিওটির শেষের দিকে এক তরুণী হাতজোড় করে বলছে ‘ক্ষমা চাইছি গাইস, ক্ষমা চাইছি তোমাদের কাছে।।’ তবে ক্ষমা চাইবার সময়ও তাঁদের মুখে ছিল ৩২ পাটি দন্ত বিকশিত হাসি। অর্থাৎ অনুতপ্ত বা অনুশোচনার লেশ মাত্র ছিলনা ওই দুই তরুণীর ব্যবহারে। তাঁদের কাছে জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় মন্ত্র বা জাতীয় পতাকা কেবলমাত্র হাসি বিদ্রুপেরই জিনিস। এমনই মনে করছেন নেট নাগরিকরা।
ভারতীয় সংবিধানের ১১টি ‘মৌলিক কর্তব্য’-এর মধ্যে প্রথমটিই হল দেশের জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় মন্ত্রকে সম্মান করতে হবে। কিন্তু এই দুই তরুণী হয়তা জানেন না অথবা বেমালুম ভুলে গেছেন ভারতীয় নাগরিক হিসাবে তাঁদের প্রাথমিক কর্তব্যকে। অথবা, সস্তায় জনপ্রিয় পাওয়ার প্রচেষ্টাও হতে পারে বলে মনে করছেন সামজিক মাধ্যমের একাংশ। তবে সার্বিক ভাবে দুই তরুণীকে গ্রেফতারের দাবি তুলছেন নেটনাগরিকরা।