বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অনেক সময় মহাকাশ (Space) থেকে পাথর অথবা উল্কাপিণ্ড (Asteroid) মাটিতে এসে পড়ে। কিন্তু সেগুলোর মধ্যে এমন কিছু বিশেষ উপাদান থাকে না যে, সেটি মানুষের নজর কাড়বে। যদিও অনেক বৈজ্ঞানিক সেগুলো গবেষণার জন্য সংগ্রহ করতে পছন্দ করেন। আবার অনেকে নিজের বাড়িতে এলিয়েন গিফট ভেবে রেখে দেন। ব্রাজিলের (Brazil) একটি গ্রামে উল্কাপিণ্ডের এরকমই শয়ে শয়ে টুকড়ো মাটিতে পড়েছিল। ওই উল্কাপিণ্ড গুলোর দাম কয়েক লক্ষ টাকা। সবথেকে বড় টুকড়োটির দাম ১৯ লক্ষ টাকা বলে জানা যায়।
ব্রাজিলের গ্রাম স্যান্টা ফিলোমেনায় ১৯ আগস্ট উল্কাপিণ্ডের বৃষ্টি হয়। ওখানকার সেটিকে পয়সার বৃষ্টি বলে আখ্যা দেয়। অনেকেই সেই পাথর গুলো জড় করে রেখে দেয়। যখন বৈজ্ঞানিকরা ওই পাথর গুলোর গবেষণা করে, তখন জানা যায় যে পাথর গুলো খুবই দুর্লভ। বৈজ্ঞানিকরা যখন গ্রামবাসীদের থেকে ওই পাথর গুলো চায়, তখন গ্রামবাসীরা পাথরের বদলে টাকা চাওয়া শুরু করে। অনেকেই লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পাথর গুলো বিক্রি করে দেয়।
৪০ কেজির সবথেকে বড় টুকড়ো ২৬ হাজার ডলারে (প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা) বিক্রি হয়। শোনা যাচ্ছে যে, স্যান্টা ফিল্পমেনায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ২০০ এর বেশি টুকড়ো পড়েছিল। এই টুকড়ো গুলো সেই উল্কাপিণ্ডের, যেটি সৌরমণ্ডল সৃষ্টি হওয়ার সময় তৈরি হয়েছিল। এই টুকড়ো গুলোর গবেষণা করে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যের ব্যাপারে জানা যেতে পারে।
বৈজ্ঞানিকরা জানান, এরকম মাত্র ১ শতাংশ উল্কাপিণ্ড আছে যেগুলো লক্ষ লক্ষ টাকার বিক্রি হয়। ব্রাজিলের ওই গ্রামের মানুষ অনেক গরীব। যারা ওই পাথর পেয়েছে, তাঁরা রাতারাতি বড়লোক হয়ে গেছে। ২০ বছর বয়সী ছাত্র অ্যাডিমার ডি কস্টা রড্রিগেজ জানায়, সেদিন রাতে গোটা আকাশ ধুয়োয় ভরে গিয়েছিল। এরপর আমি জানতে পারি যে, আকাশ থেকে উল্কাপিণ্ড পড়ছে।
শোনা যাচ্ছে যে, এই উল্কাপিণ্ড ৪.৬ বিলিয়ন বছরের পুরনো। খুবই বিরল এই উল্কাপিণ্ডটি। এর দামও অনেক অনেক বেশি। সাও পাওলো ইউনিভার্সিটিতে কেমিস্ট্রির ইনস্টিটিউট এর গ্যাব্রিয়েল সিলভা বলেন, সম্ভবত এই উল্কাপিণ্ড গুলো প্রথম খনিজ পদার্থ যেটি দিয়ে সোলার সিস্টেম তৈরি হয়েছিল।
স্থানীয় মানুষেরা যখন জানতে পারেন যে, তাঁদের এলাকায় আকাশ থেকে কিছু পড়েছে আর সেগুলো বহুমূল্য, তখন তাঁরা বলেন, আকাশ থেকে টাকার বৃষ্টি হয়েছে। অ্যাডিমার কস্টা রড্রিগেজ সাত মিটারের একটি পাথর পায়, সেটির ওজন ১৬৪ গ্রাম ছিল। সেটিকে বিক্রি করে সে ৯৭ হাজার টাকা কামিয়েছিল।
চার্চের মানুষেরা জানান, ভগবান আমাদের জন্য পয়সার ঝুলি খুলে দিয়েছে। এক গ্রামবাসী ২.৮ কেজির পাথর বিক্রি করে ১৪.৬৩ লক্ষ টাকা কামায়। রড্রিগেজ জানায়, এলাকার ৯০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। এখানকার মানুষ অনেক গরীব। তাই ভগবান আমাদের জন্য পয়সার বৃষ্টি করিয়েছে।