বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লাগাতার চলে আসা ধর্মীয় আইনের এক অপব্যবহারকে বন্ধ করতে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টে তিন তালাক বিরোধী বিল পাস করেছিল মোদি সরকার। যার জেরে পরিষ্কার জানানো হয়েছিল, তিন তালাক আসলে একটি অসাংবিধানিক প্রথা। এভাবে কাউকে বঞ্চিত করা যায়না। এমনকি এই আইন ভঙ্গ করলে তিন বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে অভিযুক্ত ব্যক্তির। কিন্তু তাতেও যেন থামতেই চাইছে না এই অমানবিক প্রথার ব্যবহার। এবার আবার এরকমই একটি ঘটনা চোখে পড়ল জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে।
বিন্নাগুড়ির বাসিন্দা জিয়াত খাতুনের অভিযোগ দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না তার। যার জেরে ধর্মীয় সালিশি সভায় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার আবেদন জানান তিনি। কিন্তু ধর্মীয় সভায় উপস্থিত হতেই তালাক দেওয়া হয় তাকে। যার জেরে এখন অসহায় অবস্থা ওই মহিলার। ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়ির চা বাগান এলাকায় বাস করেন জিয়াত খাতুন। দু’বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে হয় তার। কিন্তু দাম্পত্য জীবন একেবারেই সুখের হয় নি। ক্রমাগত তার উপর মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার করতে থাকেন তার স্বামী। যার জেরে শেষ পর্যন্ত বাপের বাড়ীতে আশ্রয় নিতে হয় তাকে। একটি সন্তানও রয়েছে জিয়াতের। এরপরে গ্রামের সালিশি সভায় আঞ্জুমান কমিটির কাছে বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানান ওই মহিলা।
লকডাউনের কারণে গত ১০ মাসে সালিশি সভা বসেনি। অবশেষে ১ জুন বিষয়টি নিয়ে বিচার করতে সালিশি সভা বসায় গ্রামের আঞ্জুমান কমিটি। কিন্তু সেই সালিশি সভাতেই জিয়াতকে সকলের সামনে তিন তালাক দেন তার স্বামী। যার জেরে এই মুহূর্তে অসহায় অবস্থা বছর পঁচিশের ওই মহিলার। ইতিমধ্যে বানারহাট থানাতে এ বিষয়ে অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে আগামী দিনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। গত রবিবার বানারহাট থানায় তিনি জানান, “আমরা নিজেরা ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি আমাকে পছন্দ করত না। আমার সন্তান হওয়ার পর স্বামী ও শারীরিক এবং মানসিকভাবে অত্যাচার শুরু করে। ওদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়িতে চলে আসি। আমাদের সমাজের আঞ্জুমান কমিটির কাছে বিচার চেয়ে আবেদন জানাই। অবশেষে ১ জুন জুমা মসজিদের সালিশি সভা বসে। সেই সভায় তিন তালাক দিয়ে আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছে। এখন আমি কি করব? পুলিশের কাছে বিচার চাইতে এসেছি। এখন আমাদের দেশে তিন তালাক নিষিদ্ধ হলেও বেআইনিভাবে আমার সাথে সম্পর্ক ছেদ করেছে। আমি বিচার চাইছি। “