বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভিনধর্মে বিয়ে করার অপরাধে বুধবার খুন হতে হয়েছে যুবককে। স্ত্রীর পরিবারের লোকজনই ইঁট এবং রড দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করেছে তাঁকে। এবার এহেন নৃশংস ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দাদার বিরুদ্ধেই গর্জে উঠলেন সদ্য স্বামীহারা স্ত্রী। ঠিক যেভাবে দাদা থেঁতলে খুন করেছে স্বামীকে, সেভাবেই দাদাকেও খুন করবেন তিনি এমনটাই সাফ জানালেন হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা সৈয়দ আসরিন সুলতানা ওরফে পল্লবী।
স্কুলে পড়াকালিনই ঘনিষ্টতা বি নাগরাজু এবং সুলতানার। দশম শ্রেণী থেকেই একে অপরের প্রেমে পড়েন। রাজু ভিনধর্মের হওয়ায় সুলতানার বাড়ি থেকে সায় ছিল না কখনওই। বরং প্রতি পদক্ষেপে এসেছে বাধা। কিন্তু হাত ছাড়েননি তাঁরা। সম্প্রতি একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়ে সারেন তাঁরা। হিন্দু মতে বিয়ের পর নামও বদল হয় সুলতানার। কিন্তু সুখ টিকল না বেশিদিন। দিন তিনেক আগে বাইকে করে যাওয়ার পথে রাজুকে খুন করে সুলতানারই দাদা সৈয়দ মাবিন আহমেদ এবং তার সঙ্গী সৈয়দ মাসুদ আহমেদ।
সদ্য প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়ে কার্যতই শোকে দিশাহারা তরুণী। এহেন মর্মান্তিক সময়েও তাঁর মধ্যে জ্বলছে স্বামীর হত্যার প্রতিশোধের আগুন। এদিন সুলতানা সাফ জানান,’যত ক্ষণ না মাথার ঘিলু বেরিয়ে এসেছিল, তত ক্ষণ পর্যন্ত আমার রাজুকে দাদা পিটিয়েছে। দাদার কাছে হাতজোড় করে মিনতি করেছিলাম ওকে মেরো না। তোমরা চাইলে আমি ওকে ছেড়ে দেব। কিন্তু ওকে প্রাণে মেরো না। কিন্তু দাদা শোনেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘লোহার রড দিয়ে মাথায় মারার পর রাজু যখন ছটফট করছিল, মৃত্যু নিশ্চিত করতে আঘাতের পর আঘাত করে গিয়েছে ওর মাথায়। ৩০-৩৫ মিনিট ধরে ওকে মেরেছে। মাথা ফেটে ঘিলু বেরিয়ে এসেছিল’
এহেন ঘটনার পর এদিন কার্যতই দাদাকে খুনের হুমকি দেন সুলতানা। তিনি স্পষ্টতই বলেছেন, ‘দাদার রক্ত আমার গায়েও বইছে। আমার রাজুকে ওরা যে ভাবে মেরেছে সেই একই ভাবে দাদাকে মারতে চাই আমি।’
এদিন কান্নাভেজা গলায় স্বামীর কথাও উঠে আসে বারবার। তিনি বলেন, ‘রাজু বলেছিল যে কোনও সময়ই আমাদের ওপর হামলা হতে পারে। কিন্তু ও ভেবেছিল একটা সময় সব ঠিই হয়ে যাবে। সেই সময়টাই আর এল না।’ সুলতানাকে ইদের কেনাকাটা করে দেওয়ার জন্য নিজের সোনার চেন ২৫ হাজার টাকায় রাজু বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলেই জানিয়েছেন সুলতানা। এহেন স্বপ্নের মত সংসার, ভালোবাসা ছারখার হয়ে যাওয়ার পর আপাতত প্রতিশোধের আগুনেই জ্বলছেন তরুণী। উল্লেখ্য, অভিযুক্তকের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।