বাংলাহান্ট ডেস্ক: নতুন বছরে দারুণ খবর শোনালেন কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। সম্প্রতি এশিয়ার প্রথম হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন (Hydrogen Train) লঞ্চ করেছে চিন। এটিকে বিশ্বের ‘সবুজতম ট্রেন’ বলা হচ্ছে। অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw) জানিয়েছেন, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতেও এই ট্রেন চালু হবে।
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতের হাইড্রোজেন ট্রেন তৈরি হবে ভারতেই। বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে না। অর্থাৎ এই হাইড্রোজেন ট্রেন আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের অধীনে হতে চলেছে। উল্লেখ্য, এর আগেও বহু বার দেশে হাইড্রোজেন ট্রেন চালানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রেল মন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, দেশের ন্যারো গেজের হেরিটেজ রুটগুলিতে ডিসেম্বরের মধ্যে এই ট্রেন চালানো হবে।
এই প্রকল্পের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই হাইড্রোজেন চালিত ট্রেনের একটি প্রোটোটাইপ উত্তর রেলের ওয়ার্কশপে পাঠানো হচ্ছে। এই প্রোটোটাইপটি হরিয়ানার সোনিপথ থেকে জিন্দ লাইনে চালানো হবে। অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “চলতি বছরের ডিসেম্বরে হেরিটেজ রুটগুলিতে হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন চালাব আমরা। এর মাধ্যমে এই রুটগুলির সম্পূর্ণ সবুজায়ন নিশ্চিত করা যাবে।”
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, রেলের পূর্ণ বৈদ্যুতিকরণ সম্ভব হচ্ছে না। আর্থিক কারণেই হোক বা অন্যান্য কোনও সমস্যার ফলে। এমন ক্ষেত্রে ডিজেল চালিত লোকোমোটিভ বদলে হাইড্রোজেন চালিত লোকোমোটিভ আনার কথা চিন্তা করা হয়। এটি সস্তা বিকল্প হওয়ার পাশাপাশি দূষণমুক্তও।
ভারতের হেরিটেজ রুটগুলিতে ডিজেল চালিত লোকোমোটিভের ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে, নিলিগিরি মাউন্টেন রেলওয়ে, কালকা সিমলা রেলওয়ে, মাথেরান হিল রেলওয়ে, কাংরা ভ্যালি, বিলমোরা ওয়াঘাই এবং মারওয়ার-দেবগড় মাদ্রিয়া রুট। প্রত্যেকটি রুটই ন্যারো গেজের। এই সমস্ত রুটে ডিসেম্বরের মধ্যে হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন আনার পরিকল্পনা রয়েছে মন্ত্রকের।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন চালিত যাত্রীবাহী ট্রেন হল কোরাডিয়া ইলিন্ট। এটি জার্মানির ট্রেন। এই ট্রেন শুধু ধোঁয়া মুক্তই নয়, আওয়াজ মুক্তও। এর থেকে শুধুমাত্র জলীয় বাষ্প নির্গত হয়। ফলে এটি পরিবেশবান্ধব। এই ট্রেন ১০০০ কিলোমিটার পথ একেবারে ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে চলতে সক্ষম। ২০১৮ সাল থেকেই জার্মানিতে এটির পরীক্ষা চলছিল।
চিনও সম্প্রতি এশিয়ার প্রথম হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন পরিষেবা শুরু করেছে। এই ট্রেন তাদের আর্বান রেলওয়ের অন্তর্গত। এতে একবার হাইড্রোজেন ভরলে ৬০০ কিলোমিটারের রেঞ্জ পাওয়া যায়। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার।