বাংলাহান্ট ডেস্ক : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রশাসনিক বৈঠক মানেই বেশ চিন্তায় থাকেন আধিকারিকরা। কখন কার কী ভুল ধরে ফেলেন তা আগে থেকে বলা যায় না। যদিও তাঁর চোখে ধরা পরা আধিকারিকদের ভুলগুলো শুধরেও দেন নিজের মতো করে। প্রয়োজন পড়লে একটু বকাঝকাও করেন। টোটকাও দেন বিভিন্ন রকম। সোমবার পুরুলিয়াযর প্রশাসনিক বৈঠক এই রকমই এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল। সাধারণ মানুষের কাজের দীর্ঘসূত্রিতা দেখে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। মানুষের কাজ করার জন্য ঘুষ নিচ্ছে সরকারি আধিকারিকরা এমন অভিযোগও তোলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। দালাল চক্র নিয়ে জেলা প্রশাসনকে তীব্র ভর্ৎসনা করতে শোনা যায় এদিন। গোটা সভা যখন ধমকের সুরে তটস্থ ঠিক সেইসময় এক ভদ্রলোকের ভুরি প্রসঙ্গে কিছুটা হালকা মেজাজে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।
কে ছিলেন এই ভদ্রলোক? তিনি হলেন ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়াল। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যানকে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় সমস্যার কথা জানতে চান। চেয়ারম্যান উঠে দাঁড়াতেই মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ তার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়, ‘এই আপনার এত্ত বড় ভুঁড়ি কেন?’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নে খানিক ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান সুরেশ। তারপর কোনও ভাবে নিজেকে সামলে জবাব দেন, ‘না আমার সুগার আছে, না প্রেসার আছে।’ চেয়ারম্যান সুরেশ আগরওয়ালের এমন উত্তর শুনে মুখ্যমন্ত্রী সন্দেহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন, ‘কিছু তো ডেফিনটলি আছেই। নিশ্চয়ই লিভারটা বড়। কিছু না হলে এত বড় মধ্যপ্রদেশ হয় কি করে?’
সভার মাঝে বেজায় অস্বস্তিতে পড়ে যান সুরেশ আগারওয়াল। তিনি বলেন, দিদি আমি রোজ ৩ ঘন্টা ব্যায়াম করি। এইবার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করে বসে, ‘ব্যায়াম করেন দেখান তো দেখি!’ অগত্যা সুরেশ কিছু একটা করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তা দেখেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন ‘আরে এটা তো আপনি প্রাণায়াম করছেন। এটা তো কপালভাতি করছেন। দিনে কতবার করেন।’ সুরেশ জানান দিনে তিনি ১০০০ বার করেন। এবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১০০০ বার হতেই পারেনা। কই এখন করে দেখান তো দেখি? সুরেশ অপ্রস্তুত হয়ে জিজ্ঞাসা করেন ‘দিদি এখন দেখাতে হবে’ মমতা বলেন হ্যাঁ, স্টেজে এসে দেখান। ১০০০ বার এটা করতে পারলে আমি আপনাকে ১০ হাজার টাকা দিব। তখন সুরেশ বলেন দিদি এটা বিকেল পাঁচটার আগে করা যায় না।
তবে এরপর সুরেশ ঝুলি থেকে বেড়াল বের করেন। নিজের গোপন কথাটি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, তার তেলে ভাজা খাওয়ার অভ্যাস আছে। সকালে পকোড়া খান,সেটা না খেলে ওঁর আর চলে না। তাই বর্তমানে তার ওজন ১২৫ কেজি। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় স্টেজে দাঁড়িয়ে সুরেশ আগারওয়াল কে প্রেসক্রিপশন বলে দেন। তিনি বলেন, এক মাস এখন থেকে সেদ্ধ ভাত খেতে হবে। সন্ধ্যে সাতটার মধ্যে খাওয়া শেষ করুন না হলে পরদিন সকাল দশটা পর্যন্ত কিছু খাবেন না।সব দিকেই নজর রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাই হয়তো প্রশাসনিক কাজকর্মে তিনি দলের কর্মীদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারেও যথেষ্ট খোঁজ খবর রাখছেন আজকাল।