বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote) পূর্বে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত দিদির দূতরা পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। আর তাতেই বিপাকে শাসক দল। দিক দিক থেকে গ্রামবাসীর রোষের শিকার হচ্ছেন দিদির দূত রূপে তৃণমূলের নেতা, বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রীরা। আর এবার সেই দিদির দূতদের নিয়ে বেফাঁস নিদান দিয়ে বসলেন বিজেপি সাংসদ (BJP MP) লকেট চট্টোপাধ্যায় (Loket Chatterjee)। আর তাতেই শোরগোল রাজনীতির অন্দরে।
রবিবার হুগলির (Hooghly) জিরাটের এক সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেত্রী। সেখানে দাঁড়িয়েই ‘দিদির দূতরা অভিযোগ শুনতে না চাইলে তাঁদের বেঁধে রাখার পাশাপাশি চড়-থাপ্পড়ের নিদান দিলেন বিজেপি সাংসদ। প্রসঙ্গত, গতকাল বারাসাতের ১ ব্লকের ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের সাইবনা গ্রামে ‘দিদির দূত’ হয়ে কর্মসূচীতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ। কিন্তু সেখানেই গ্রামের এক বিজেপি সমর্থক যুবক নিজের অভিযোগ জানাতে আসতেই তাঁকে প্রকাশ্যে গালে সপাটে চড় মারেন এক তৃণমূল কর্মী। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করেই ময়দানে নেমেছে বঙ্গ বিজেপি। অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতারের দাবিতে ধর্নায় বসেছে বিজেপির যুব মোর্চা। রবিবার হুগলির জিরাটে সেই ধর্নামঞ্চ থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন লকেট।
এদিন ঠিক কী বলেন বিজেপি সাংসদ? ধর্নামঞ্চ থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দিদির দূতেরাই দুর্নীতিগ্রস্থ, তাঁরা আবার যাচ্ছেন মানুষের অভাব অভিযোগ শুনতে। মানুষের অভিযোগ শুনতে যাচ্ছেন আর অভিযোগ জানালেই চড় থাপ্পড় মারছেন।’ এরপরই তিঁনি বলেন ‘কেউ যদি চড় মারে, তবে আপনারা ছেড়ে দেবেন না। আপনারাও চার-পাঁচটা দিন। দিদির দূতেরা যদি অভিযোগ না শোনে তবে ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে বসিয়ে রেখে, বেঁধে রেখে অভিযোগ শোনান। সরকার তাঁদের, পঞ্চায়েত তাঁদের, তাঁরা কেন মানুষের জন্য কাজ করবেন না? আবার অভিযোগ করতে এলে থাপ্পড় মারা। আমি সামনে থাকলে ঘুরিয়ে চারটে থাপ্পড় মারতাম।’ লকেটের সংযোজন, ‘ দিদির দূত, দিদিকে বলো, সুরক্ষাকবচ বিভিন্ন রূপে রূপে আসছে। যেমন বহুরূপী হয়, ঠিক তেমন। একই জিনিস ঘুরে ঘুরে আসছে। সব এক, সব চোর ডাকাত। এরা মানুষকে ভয় দেখাতে আসছেন, আপনারা কেউ ভয় পাবেন না।’
অন্যদিকে লকেটের এহেন মন্তব্যের পাল্টা সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। এবিষয়ে হুগলির জেলা যুব তৃণমূল নেত্রী রুনা খাতুনের বক্তব্য, ‘ মাননীয় সাংসদ কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন। তিঁনি বারবার একই ঘটনা ঘটান। তিঁনি সেই নেত্রী যিনি নিজের গাড়ির কাচ ভেঙে সাম্প্রদায়িকতা করতে গিয়েছিলেন। সবসময় গুন্ডারাজ কায়েম করার চেষ্টা করেন। তিঁনি বলেছেন দিদির দূতেরা নাকি দিদির ভূত। ভূত দেখলে যাঁরা ভয় পাওয়ার তাঁরাই পাচ্ছেন। বিজেপি ভয় পাচ্ছে, এই উন্নয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে গেল তারা বাংলা ছেড়ে পালানোর রাস্তা পাবে না।’