‘আমার বেআইনি সম্পত্তির খোঁজ মিললে রাজনীতিই ছেড়ে দেব’, আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ ব্রাত্যর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইডির দাপটে থরহরি কম্প বাংলায়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Scam) ইতিমধ্যেই জেলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। গরুপাচার মামলায় টানাপোড়েন চলছে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) নিয়েও। এরই মধ্যে বাংলার ১৯ নেতা-মন্ত্রীর নামের তালিকা সামনে এসেছে। তাঁদের সম্পত্তি দিন প্রতি দিন কী ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata High court)। সেই মামলায় পার্টি করা হয়েছে ইডিকেও (ED)। এবার ১৯ নেতা-মন্ত্রীর তালিকায় রয়েছেন বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) নামও। কিন্তু এই তালিকায় নাম থাকা নিয়ে ব্রাত্য যে একদমই চিন্তিত নন সেটা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে পাল্টা চ্যালেঞ্জও ছুঁড়লেন তিনি। তাঁর দাবি সম্পত্তির হিসাবে কোনও কিছু অস্বাভাবিক দেখা গেলে তিনি রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন।

সোমবার বিকাশ ভবনে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ব্রাত্য। উপস্থিত সাংবাদিকরা আদালতের নির্দেশ সংক্রান্ত প্রশ্নও করেন। তার জবাবে ব্রাত্য বলেন, ‘আদালতের রায় নিয়ে আমার বিশেষ কিছুই বলার নেই। আমি তিনবার নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে হলফনামা জমা দিই। সেটা মিলিয়ে যদি কোনওরকম অস্বাভাবিক সম্পত্তি দেখা যায় তাহলে আমি রাজনীতিই ছেড়ে দেব।’

ওই মামলায় যে সমস্ত নেতা মন্ত্রীদের নাম রয়েছে তাঁরা সকলেই ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছেন। এই দুই নির্বাচনের সময় নিয়ম মতো নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় নিজেদের সম্পত্তির হিসাবও জমা দেন। সেখানেই দেখা যাচ্ছে কার সম্পদ ঠিক কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মামলাকারী আদালতে দাবি করেন ব্রাত্য বসুর ২০১১ সালের আয়কর রিটার্নের হিসাব অনুসারে তাঁর আয় ছিল ছ’লাখ ৯৭ হাজার ৫২৩ টাকা। ২০১৬ সালে সেই আয় কমে হয় দু’লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা। অর্থাৎ ব্রাত্যর আয় প্রায় ৬৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে ওই ৫ বছরে। কিন্তু অস্থাবর সম্পত্তির যে হিসাব দেওয়া হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ সালে ব্রাত্যর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১৫ লাক্ষ ৮৪ হাজার ২০৩ টাকা ৯১ পয়সা। ২০১৬ সালে সেটা বৃদ্ধি পায় ৩২ লাক্ষ ১২ হাজার ৫৭ টাকা। অর্থাৎ বৃদ্ধি পরিমাণ প্রায় ১০৩ শতাংশ।

এরই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর স্ত্রীয়ের সম্পত্তি হিসাবও দেওয়া হয়। ২০১১ সালে ব্রাত্য বসুর স্ত্রীয়ের আয় উল্লেখ করা হয়েছে, ১ লক্ষ ৯২ হাজার ৫৯৪ টাকা। ২০১৬ সালে সেই আয় বৃদ্ধি পায় ১৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ২০ টাকা। বৃদ্ধি পরিমাণ প্রায় ৬০০ শতাংশ। তাঁর স্ত্রীয়ের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণও এই পাঁচ বছরের বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩৮২। ২০১১ সালে ছিল ১৭ লক্ষ ২৫ হাজার ৫৯৭ টাকা। ২০১৬ সালে সেটাই লাফিয়ে বাড়ে ৮৩ লক্ষ ১৭ হাজার ১২০ টাকা। এই বিপুল পরিমান সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়েই এবার তদন্ত করতে চলেছে ইডি।

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর