বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমরা সূর্য (Sun) থেকে আলো এবং শক্তি পাই। এমনকি, পৃথিবীতে (Earth) সমগ্ৰ শক্তির উৎসস্থলও হচ্ছে সূর্য। এমতাবস্থায়, সূর্যালোকও আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এমনিতেই রাত বা গ্রহণের সময়ে সূর্য থেকে আলো আসা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায় চারিদিক।
এমতাবস্থায়, কখনও ভেবে দেখেছেন যে, যদি সূর্যের আলো চিরতরে পৃথিবীতে আসা বন্ধ হয়ে যায় তখন ঠিক কি ঘটবে? অনেকে নিশ্চয়ই ভাবছেন, এমনটা হলে পৃথিবীতে অন্ধকার অর্থাৎ রাত নেমে আসবে। কিন্তু, এই ঘটনা ছাড়াও পৃথিবীতে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটবে যা রীতিমতো চমকে দেবে সবাইকে। বর্তমান প্রতিবেদনে সেই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমবে না: ফ্রিজে যেমন হঠাৎ করে গরম চা রাখলে তা সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা হয়ে যায় না একইভাবে, সূর্যের আলো না থাকলে পৃথিবীও সঙ্গে সঙ্গে শীতল হয়ে যাবে না। এই প্রসঙ্গে পপুলার সায়েন্স ম্যাগাজিনের একটি প্রবন্ধ অনুসারে জানা গিয়েছে, মহাকাশে ঘূর্ণনের কারণে আমাদের পৃথিবী কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে পুরোপুরি শীতল হবে না। তবে, ক্রমাগত সূর্যালোক না থাকলে, পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে যাবে এবং তারপর সেটি মাইনাসেও চলে যাবে।
এক সপ্তাহের মধ্যেই তাপমাত্রা পৌঁছে যাবে শূন্য ডিগ্রির নিচে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, যখন সূর্যের আলো এবং তাপ পৃথিবীতে পৌঁছবে না, তখন এক সপ্তাহের মধ্যেই পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির নিচে চলে যাবে। যার জেরে সর্বত্র তুষারপাত হবে এবং জীবনযাত্রাও অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠবে। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা মাইনাসের দিকে চলে যাবে এবং সমগ্ৰ বছরে তা -১০০ ডিগ্রি পর্যন্ত নেমে যাবে। এর পাশাপাশি সমুদ্রের উপরের স্তরগুলোও বরফে পরিণত হবে। যদিও, সমুদ্রের গভীরে জলের উপস্থিতি থাকবে। আর এই কারণেই মহাসাগরগুলি কখনোই পুরোপুরি শক্ত বরফে পরিণত হবে না। তবে, কয়েক লক্ষ বছর পর পৃথিবীর তাপমাত্রা -৪০০ ডিগ্রিতে পৌঁছে গিয়ে স্থিতিশীল হবে।
-৪০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কে বেঁচে থাকবে: উল্লেখ্য যে, সূর্যালোক অদৃশ্য হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই পৃথিবীর জনজীবন রীতিমতো শেষ হয়ে যাবে। পাশাপাশি, সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে প্রকৃতির অধিকাংশ উদ্ভিদ অর্থাৎ গাছ-গাছালি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিলুপ্তির পথে অগ্রসর হবে। এমতাবস্থায়, খাদ্যভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে জীবজগতও। তবে এই তাপমাত্রাতেও পৃথিবীতে বসবাসকারী কিছু অতি ক্ষুদ্র প্রাণী, যাদেরকে অণুজীব বলা হয় সেগুলি বেঁচে থাকতে পারবে।