বাংলা হান্ট ডেস্ক: শেয়ার বাজার (Share Market) হল এমনই একটি ক্ষেত্র যেখানে লাভের পরিমাণ সর্বদা ওপর-নিচে হতে থাকে। এমতাবস্থায়, নির্দিষ্ট স্টক থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য স্ট্র্যাটেজিও থাকা উচিত। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার বিভিন্ন ক্ষেত্রের তিনটি কোম্পানির শেয়ার বিক্রির পরামর্শ দিয়েছে ব্রোকারেজ। এই শেয়ারগুলি হল কেইসি ইন্টারন্যাশনাল, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড (HUL) এবং হিরো মোটোকর্প। ব্রোকারেজ অনুযায়ী, এগুলির শেয়ার ২৪ শতাংশ পর্যন্ত পতন হতে পারে। এর মধ্যে একটি শেয়ার গতকাল গ্রিন জোনে এবং বাকি দু’টি রেড জোনে ছিল। এমতাবস্থায়, এই তিনটি শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্রোকারেজের স্ট্র্যাটেজি ঠিক কি তা বর্তমান প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হল।
কেইসি ইন্টারন্যাশনাল: প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, কেইসি ইন্টারন্যাশনাল হল একটি MNC। ইলেকট্রিক পাওয়ার ট্রান্সমিশন টাওয়ার তৈরির ক্ষেত্রে এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কোম্পানি। এছাড়াও, এটি বিশ্বের বৃহত্তম পাওয়ার ট্রান্সমিশন, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট এবং নির্মাণ সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম একটি। দেশীয় ব্রোকারেজ ফার্ম এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের মতে, এর ব্যবসায়িক গ্রোথ সামনের দিকে ভালো বলে মনে হলেও উচ্চ ভ্যালুয়েশন, ভারী ঋণের ব্যালেন্স শিট, ব্যাঙ্কিং ক্যাপিটালে বৃদ্ধি এবং দুর্বল লাভের কারণে এটিকে রেডিউস রেটিং দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, ব্রোকারেজ এটিতে বিনিয়োগের জন্য ৪৩৩ টাকার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। যা বর্তমান স্তর থেকে প্রায় ২৪ শতাংশ ডিসকাউন্টের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়েছে। এই শেয়ার গতকাল ৩.৫৩ শতাংশ বৃদ্ধির সাথে বিএসইতে ৫৭০.১০ টাকায় বন্ধ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেড (HUL): এফএমসিজি সেক্টরের অন্যতম বৃহৎ কোম্পানি হিন্দুস্তান ইউনিলিভার লিমিটেডের শেয়ার গতকাল বিএসইতে ১.২৮ শতাংশ কমে ২,৬৮০.৬৫ টাকায় বন্ধ হয়েছে। ব্রোকারেজ এইচডিএফসি সিকিউরিটিজ অনুসারে, এখন এটি ২,৪৫০ টাকা অর্থাৎ প্রায় ৯ শতাংশ পর্যন্ত নামতে পারে। এই শেয়ারে এহেন নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গিয়েছে মার্জিন রিকভারির তুলনায় ডিমান্ড পিকআপ বেশি মন্থর হওয়ার কারণে। কাঁচামালের দাম কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি দাম কমাচ্ছে, কিন্তু সাধারণত দাম কমে যাওয়া এবং চাহিদা বৃদ্ধির মধ্যে অন্তত ১ থেকে ৩ ত্রৈমাসিকের পার্থক্য থাকে।
এগুলি ছাড়াও খুচরো বিক্রেতারা যখন দাম কম থাকে তখন কম স্টক রাখে। তাই প্রাইমারি গ্রোথ নিকটবর্তী মেয়াদে সেকেন্ডারি গ্রোথের পেছনে থাকবে। ব্রোকারেজের মতে, কাঁচামালের কম দামের সুবিধা গ্রাহকদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তাই এটির সম্প্রসারণের গতি হবে ধীর। এছাড়াও, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে, সংস্থাটি বিজ্ঞাপন এবং প্রচারে ব্যয় বাড়াবে। এই সব কারণে ব্রোকারেজ তাদের রেডিউস রেটিং বজায় রেখেছে।
হিরো মোটোকর্প: Honda Motor & Scooter India শাইনের ১০০ সিসি মডেলের সাথে এন্ট্রি-লেভেলে ১০০ সিসির সেগমেন্টে প্রবেশ করেছে। ব্রোকারেজ এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের মতে, এটি এই সেগমেন্টে হিরো মোটোকর্পের শেয়ার কমাতে পারে। হিরো বর্তমানে এই সেগমেন্টে আধিপত্য বিস্তার করছে। যার সেলস ভলিউমের প্রায় ৭৮ শতাংশ এই সেগমেন্ট থেকেই আসে এবং হিরোর সংশ্লিষ্ট বিভাগে ৮০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এদিকে, ১২৫ সিসির সেগমেন্টে এর মার্কেট শেয়ার ইতিমধ্যেই ২০১৯-এর অর্থবর্ষে ৫৫ শতাংশ থেকে কমে এখন মাত্র ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে, ব্রোকারেজ হিরোর রেটিং বাই থেকে নামিয়ে রিডিউস করেছে। পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২,৫১২ টাকা। গতকাল এটি বিএসইতে ১.৭০ শতাংশ পতনের সাথে ২,৭৮৩.১৫ টাকায় বন্ধ হয়েছে এবং লক্ষ্য অনুযায়ী এটি ৬ শতাংশের বেশি পতন হতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বাংলাহান্ট-এ প্রকাশিত এই পরামর্শ বা মতামত বিশেষজ্ঞ/ব্রোকারেজ ফার্মের ব্যক্তিগত মতামত। ওয়েবসাইট বা ম্যানেজমেন্ট এর জন্য দায়ী নয়। বাংলাহান্ট পাঠকদের জানাচ্ছে যেকোনো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সর্বদা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।