বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে রান্নার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মশলার ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। যেগুলি মূলত রান্নার স্বাদ বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। ঠিক সেইরকমই এক মশলা হল এলাচ (Cardamom)। এটি এমন একটি মশলা যেটি দেশের প্রতিটি রান্নাঘরেই ব্যবহার করা হয়। শুধু তাই নয়, এলাচ বিভিন্ন মিষ্টি এবং পানীয়ের স্বাদ ও সুগন্ধও বৃদ্ধি করতে পারে। এছাড়া এতে অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে। আর এই কারণেই শুধু ভারতেই নয়, বরং সারা বিশ্বেই এলাচের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি, এটি চড়া দামেও বিক্রি হয়। এমতাবস্থায় এই চাষ কৃষকদের জন্যেও লাভবান হিসেবে বিবেচিত হয়।
বর্তমানে ভারতে এলাচ ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়। কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে এই চাষের আধিক্য দেখা গেলেও এখন উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের কৃষকরাও সফলভাবে এই চাষ করছেন। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
এলাচ চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ: প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, দোআঁশ মাটি এলাচ চাষের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। তবে, ল্যাটেরাইট মাটি ও কালো মাটিতেও এর চাষ করা যায়। এলাচের ক্ষেতে জল নিষ্কাশনের জন্য ভালো ব্যবস্থা থাকতে হবে। তবে, মাথায় রাখতে হবে যে, বেলে মাটিতে এলাচ চাষ করা উচিত নয়। এছাড়া এলাচ চাষের জন্য ১০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা ভালো বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রতি কেজির দাম ১,০০০ টাকা! রয়েছে প্রচুর চাহিদাও, এই চাষ শুরু করলে হয়ে যাবেন মালামাল
বর্ষাকাল সবথেকে ভালো: এলাচ চাষ শুরু করার জন্য বর্ষাকাল হল সবথেকে ভালো। এমতাবস্থায়, জুলাই মাসে জমিতে এলাচের চারা রোপণ করা যেতে পারে। এই সময়ে বৃষ্টির কারণে সেচেরও প্রয়োজন কম হয়। এলাচ গাছ সবসময় ছায়ায় রোপণ করা উচিত। কারণ, প্রখর সূর্যালোক এবং তাপের কারণে এর ফলনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। উল্লেখ্য যে, এলাচ গাছের কান্ড ১ থেকে ২ মিটার লম্বা হয়। পাশাপাশি, দু’টি গাছের মধ্যে এক থেকে দু’ফুট দূরত্ব থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: ভুলে যান চাকরির চিন্তা! আজই শুরু করুন এই লাভজনক চাষ, ৬ মাসে আয় হবে ১০ লক্ষ টাকা
দাম: এলাচ গাছ তৈরি হতে ৩ থেকে ৪ বছর সময় লাগে। তবে, এলাচের ফলন হেক্টর প্রতি ১৩৫ থেকে ১৫০ কেজি হতে পারে। ফসল তোলার পর কয়েকদিন রোদে এগুলি শুকোনো হয়। উষ্ণ তাপমাত্রায় ১৮ থেকে ২৪ ঘন্টা শুকোনোর পরে এটি হাত কিংবা তারের জাল দিয়ে ঘষে দেওয়া হয়। তারপর আকার এবং রঙ অনুযায়ী সাজিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে এলাচের প্রতি কেজির দাম হল ১,১০০ থেকে ২,০০০ টাকা। আর এভাবেই আপনি এই চাষ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন।