গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পরেও শিক্ষা নেই! গ্রামীণ হাওড়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ‘বেআইনি’ বহুতল, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

   

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ খুব বেশিদিন হয়নি। মাস দুয়েক আগেই কলকাতার গার্ডেনরিচে একটি নির্মীয়মাণ বেআইনি বহুতল (Illegal Construction) ভেঙে পড়ে। যে কারণে প্রাণ হারান ১৩ জন। সেই ঘটনার জেরে মুখ পুড়েছিল কলকাতা পুরসভার। বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাদের। তবে এবার কলকাতা নয়, শিরোনামে উঠে এসেছে হাওড়া (Howrah) গ্রামীণের বেআইনি বহুতল নির্মাণের রমরমা।

প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় পঞ্চায়েতমন্ত্রী থাকাকালীন পঞ্চায়েত অঞ্চলে অবৈধ বহুতল নির্মাণে লাগাম টানতে নতুন বিল্ডিং আইন তৈরি হয়েছিল। ২০১৬ সাল নাগাদ সেই আইন তৈরি হয়। সেখানে বলা হয়েছিল, দোতলার বেশি উচ্চতার আবাসন যদি তৈরি করতে হয়, তাহলে জেলা পরিষদের থেকে অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু গ্রামীণ হাওড়ায় (Rural Howrah) বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই আইন স্রেফ খাতায় কলমেই আটকে রয়েছে।

আমতার গুজারপুর অঞ্চলে যেমন বেশ কয়েকটি নির্মীয়মাণ বহুতলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তলার পাশাপাশি তদন্তের দাবি জানিয়ে জেলা পরিষদে চিঠি পাঠিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ। আন্দুলের ঝোড়হাটেও দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। একটি পাঁচ তলা আবাসনের নির্মাণকাজ বন্ধ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আরও পড়ুনঃ বৈশাখী কন্যাকে দিতে চান নিজের নাম! নিজের ছেলেমেয়ের খোঁজ নেন? সাক্ষাৎকারে অকপট শোভন

গুজারপুরের স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের যেমন অভিযোগ, একাধিক দাগ নম্বরে এখানে আলাদা আলাদা করে বহুতল তৈরি করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার দু’টি বহুতলের মধ্যে দরকারি ছাড় রাখা হয়নি। কোথাও দোতলার অনুমতি নিয়ে চারতলা, কোথাও আবার চারতলার অনুমতি নিয়ে পাঁচতলা আবাসন বানানো হচ্ছে। কিছু অংশে ‘বর্গা’ রেকর্ড থাকা জমিতেও একটি ভবন তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই সকল আবাসনে ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারা। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাচ্ছেন না। অনেক জায়গায় আবার নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ করে তোলা হচ্ছে দেওয়াল। ঝোড়হাট মিলনী সঙ্ঘের কাছে যে পাঁচতলা আবাসন নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে আপত্তি হল, এর সামনের রাস্তা মাত্র ৫ ফুট চওড়া। এত সংকীর্ণ রাস্তার পাশে কীভাবে এত বড় আবাসন তোলা হচ্ছে? এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। একজন এলাকাবাসী বলেন, ‘বহুতলের বারান্দাগুলো রাস্তার ওপর ঝুলছে। ৫ ফুটের রাস্তার ওপরেই ফেলে রাখা হয়েছে ইমারতি দ্রব্য। জল নিকাশির রাস্তাটাও বন্ধ’।

Construction in Howrah

জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘দোতলার বেশি উচ্চতার বহুতল তৈরি করতে জেলা পরিষদের অনুমতি দরকার। একথা ঠিক। তবে এটা নতুন আইন। এর আগে পঞ্চায়েত স্তরেই অনুমতি নেওয়া হতো। এক্ষেত্রে কী হয়েছে সেটা ঠিক বলা যাবে না। তবে অভিযোগ যেহেতু এসেছে, তদন্ত করা হবে’। অন্যদিকে আমতার গুজারপুর এলাকায় বহুতম তৈরির সঙ্গে যুক্ত একজন প্রোমোটার বলেন, ‘নিয়ম মেনেই কাজ করেছি। কয়েকজন আমার কাছে চাঁদার জন্য এসেছিলেন। দিইনি বলে জেলা পরিষদে অভিযোগ করেছেন’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর