বাংলা হান্ট ডেস্কঃ IMA জুয়েলারি পুঞ্জি স্ক্যামে (IMA Scam) অভিযুক্ত মোহম্মদ মনসুর খান-কে দিল্লী বিমানবন্দর থেকে আজ সকালে গ্রেফতার করলো ইডি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দিল্লীর এমটিএনএল বিল্ডিং এর ইডি দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে এসআইটি অধ্যক্ষ রবিকান্ত গৌড়া বলেছিলেন যে, এসআইটি টিম কোম্পানির সংস্থাপক মনসুর খানের বিরুদ্ধে লুকআউট সার্কুলার জারি করেছে। এসআইটি নিজেদের সুত্র মারফত দুবাইতে মনসুর খানের আস্তানার খোঁজ লাগিয়েছিল। তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য, আর নিজেকে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল।
দিল্লীতে এসআইটি-র আধিকারিকরা তাঁকে সুরক্ষিত ভাবে গ্রেফতার করার জন্য প্রথম থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গৌড়া বলেন, ‘ইডি আর এসআইটি মনসুর খানের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করেছিল। তাঁকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া মেনেই ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হত।”
আপনাদের জানিয়ে রাখি, হালালা ব্যাংকের সংস্থাপক মনসুর খান ১৫ই জুলাই একটি ভিডিও জারি করে বলেছিল যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সে ভারতে ফিরছে। মনসুর বলেছিল, ‘আমি ভারতের আইনে সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্বাস করি। সবার আগে ভারত ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া একটা বড় ভুল ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছিল যে, বাধ্য হয়ে আমাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল। আমি এখন এটাও জানিনা যে, আমার পরিবার এখন কোথায়।”
এসআইটি তদন্তে এটা সামনে এসেছে যে, মনসুর খান দুবার দুবাই থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। সে ৮ জুন ব্যাঙ্গালুরু থেকে পালিয়েছিল। এসআইটি এর এক বরিষ্ঠ আধিকারিক বলেন, দুবাই থেকে সৌদি আরব যেতে চেয়েছিল মনসুর, কিন্তু ট্র্যাভেল এজেন্ট তাঁকে সাহায্য করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল। আবার দুবাই থেকে ওমান যাওয়ার আগে, তাঁর পাসপোর্ট নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
কি এই IMA জুয়েলারি পুঞ্জি স্ক্যাম? প্রায় ১৩ বছর আগে মনসুর খান আইএমএ নামের একটি ইসলামিক ব্যাংক আর হালালা বিনিয়োগ কোম্পানি শুরু করে। তিনি মানুষের বিনিয়োগে ১৪-১৮ শতাংশ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাঁর কোম্পানিতে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী মুসলিম ছিল। খান জুয়েলারি, রিয়েল ইস্টেট, ফার্মেসি আর পাব্লিকেশন এবং শিক্ষা-র ব্যাবসা ছড়িয়ে রেখেছিল। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁর কোম্পানিতে ১০ হাজার বিনিয়োগকারী পয়সা লাগিয়েছিল। প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হয়েছিল তাঁর কোম্পানিতে। বিনিয়োগকারীদের মতে, কিছু মসজিদের উলেমা আর মৌলবিরা আইএমএ-তে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছিল। মৌলবিরা তাঁদের টাকা সুরক্ষিত থাকার ভরসাও দিয়েছিল। আর তাঁর সাথে এটাও বলা হয়েছিল যে, এই কোম্পানি ইসলামিক দিশানির্দেশ মেনে কাজ করে।