বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের (Pakistan) আর্থিক অবস্থার অবনতি অব্যাহত। তাদের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারের (Forex reserve) অবস্থা গত ৯ বছরে এত নীচে নামেনি। সাধারণ মানুষের নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো অবস্থা। দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার ২৫ শতাংশে চলে গিয়েছে। এর জেরে জিনিসের দাম সাধারণের সাধ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। পাশাপাশি, দেশে জিনিসের জোগানও শেষের পথে।
শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) সঙ্গে শাহবাজ সরকারের আর্থিক সাহায্যের আলোচনাও ব্যর্থ হয়েছে। IMF-এর যে প্রতিনিধি দলটি পাকিস্তানে এসেছিল, তা ফিরে গিয়েছে ওয়াশিংটনে। পাকিস্তানের আধিকারিকদের সঙ্গে ১০ দিন ধরে ১১ কোটি ডলার ঋণ হিসেবে দেওয়া নিয়ে কথা চলছিল। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গগে কোনও চুক্তিতেই সই করেনি IMF-এর ওই দল।
যদিও এখনও IMF থেকে ঋণ পাওয়ার আশা করছে পাকিস্তান। এই আর্থিক সাহায্য পাকিস্তানকে পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে। কিন্তু IMF তাদের সাহায্য করতে অস্বীকার করায় মহাবিপদে পড়ল পাকিস্তান। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে। তবে এরপর জিনিসের দাম না দিতে পারলে অন্যান্য দেশগুলি সরবরাহ আটকে দেবে। ফলে বিপদে পড়বেন সাধারণ মানুষ।
অনেক আগে থেকেই পাকিস্তানের মাথার উপর অর্থসঙ্কটের খাঁড়া ঝুলছিল। সে দেশের মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ভুল অর্থনৈতিক নীতি, ভুল খাতে টাকা খরচ করা এবং শাসনে গাফিলতির কারণে পাকিস্তানকে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। একের পর এক সরকার ক্ষমতায় এসে ইচ্ছে মতো আর্থিক নীতিতে বদল করেছে। নতুন সরকার এসে আগের সরকারের নীতিকে বাতিল করে দিয়েছে। এর জেরে ক্রমশ কমজোর হয়েছে অর্থনীতির ভীত।
এছাড়াও পাকিস্তানের জিডিপিতে একটি ভারসাম্যের সঙ্কট দেখা গিয়েছে ক্রমশ। মূলত দু’টি কারণে আজকের এই অর্থসঙ্কট। প্রথমত, ২০০৮ সালে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচের জন্য ভর্তুকি বাড়ানো। দ্বিতীয়ত, খুব কম কর রাজস্ব আদায়। এসব কারণেই দ্রুত বেড়েছে রাজস্ব ঘাটতি। গোটা বিশ্বের কাছে পাকিস্তান মানেই সন্ত্রাসের আঁতুরঘর। এই সমস্যা সমাধান করার জায়গায় জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছে তারা।
এতে তাদেরই ক্ষতি হয়েছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে চলা রাজনৈতিক উথালপাথালের প্রভাব পড়েছিল দেশের অর্থনীতিতেও। এছাড়া ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় ৩৩০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এই কারণে জিডিপি-ও ২.২ শতাংশ কমে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আর্থিক সঙ্কট থেকে বেরোতে পাকিস্তানকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হয় তাদের IMF-এর শর্ত মানতে হবে। নয়তো খারিজ করে দিতে হবে। তবে আপাতত মনে হচ্ছে প্রথম বিকল্পটিই বেছে নেবে তারা।