বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত সপ্তাহগুলিতে ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি (Gautam Adani) এবং হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ (Hindenburg Research) এই দু’টি নাম রীতিমতো উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। মূলত, আমেরিকার ওই রিসার্চ ফার্ম গত ২৪ জানুয়ারি আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। যার ফলে বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হয় সমগ্ৰ আদানি সাম্রাজ্য। এমনকি, মোট সম্পদের পরিমান কমে যায় গৌতম আদানিরও। অন্যদিকে, আদানি গ্রূপের প্রসঙ্গে রিপোর্ট বের করে এই শর্ট সেলার কোম্পানি এবং এটির প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসনের (Nathan Anderson) জনপ্রিয়তা এক নিমেষে বেড়ে যায়।
হিন্ডেনবার্গের জনপ্রিয়তায় ব্যাপক বৃদ্ধি: মূলত, আদানি গোষ্ঠীর উপর প্রকাশিত রিপোর্টটির পরিপ্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে হিন্ডেনবার্গ। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যানালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম সোশ্যাল ব্লেডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, আদানি গ্রুপের রিপোর্টের পর থেকে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের ফলোয়ার্সের সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ বেড়েছে। যার ফলে ওই সংস্থার মোট ফলোয়ার্স সাড়ে চার লক্ষ ছাড়িয়েছে।
বেড়েছে অ্যান্ডারসনের ফলোয়ার্সও: এদিকে, হিন্ডেনবার্গের পাশাপাশি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নাথান অ্যান্ডারসনও টুইটার সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিখ্যাত হয়ে উঠছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক মাসের মধ্যে টুইটারে নাথান অ্যান্ডারসনের ফলোয়ার্সের সংখ্যা ১৭,০০০ বেড়েছে। অ্যান্ডারসনের টুইটার হ্যান্ডেলের নাম হল @ClarityToast। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর মোট ফলোয়ার্স পৌঁছে গিয়েছে ৪৪ হাজারে।
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল রিসার্চ ফার্ম হিন্ডেনবার্গ ২০১৭ সালের জুলাই মাসে টুইটারে যোগ দিয়েছিল। তবে, এটির ফলোয়ার্স সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। এদিকে, নাথান অ্যান্ডারসন তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলকে “Personal Account” হিসেবে বিবেচিত করেছেন। পাশাপাশি তাঁর সমস্ত টুইট হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের সাথে সম্পর্কিত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সেখানে মাত্র ৪৩০ জন ফলোয়ার্স বৃদ্ধি পেয়েছিল। অপরদিকে, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রায় ৭,০০০ ফলোয়ার্স বেড়েছে। শুধু তাই নয়, ফেব্রুয়ারি মাসেও ওই সংখ্য ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
আদানি রিপোর্টের পর টুইটের বন্যা: গত এক মাসে অ্যান্ডারসন বা হিন্ডেনবার্গের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে করা টুইটগুলির বিষয়ে জানাতে গেলে বলতে হয়ে যে, নাথান অ্যান্ডারসন আদানি গ্রুপের রিপোর্ট প্রকাশের পরে বেশিরভাগ মিডিয়া রিপোর্ট টুইট/রিটুইট করেছেন। এই অ্যাকাউন্ট থেকে ৭ ডিসেম্বর, ২০২২-এ একটি টুইট করা হয়েছিল, তারপর টুইট করা হয় ৯ জানুয়ারি। কিন্তু ২৪ জানুয়ারি, আদানি সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশিত হয় এবং এই টুইটার অ্যাকাউন্টটিতে রীতিমতো টুইটের বন্যা শুরু হয়। যার মধ্যে আদানি সম্পর্কিত বেশিরভাগ টুইট ২৫ জানুয়ারি করা হয়েছিল।
১৬ টি কোম্পানির প্রসঙ্গে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়: ইতিমধ্যেই আদানি গ্রূপের আগে হিন্ডেনবার্গের তরফে নিকোলা, টুইটার, ভিন্স ফাইনান্স, চায়না মেটাল রিসোর্স ইউটিলাইজেশন, এস সি ওয়ার্কস সহ প্রায় ১৬ টি কোম্পানির উপর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। যার মধ্যে টুইটার সম্পর্কিত রিপোর্টও আলোচনায় উঠে এলেও সবচেয়ে আলোড়ন ফেলে দেয় আদানি গ্রূপের রিপোর্ট।
বড় ক্ষতি আদানির: এই রিপোর্টের পরেই গৌতম আদানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিলিয়নেয়ারদের তালিকায় এক ধাক্কায় শীর্ষ ২০ থেকে ছিটকে যান। পাশাপাশি, আদানি গ্রুপের শেয়ারের দামও ব্যাপকভাবে কমে যায়। যা এখনও পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, আদানি গ্রুপের মার্কেট ক্যাপ ১১৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি কমেছে। ফোর্বসের রিয়েল টাইম বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, আদানির মোট সম্পদের পরিমান ৫২.৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে এবং তিনি আপাতত শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ২৪ তম স্থানে রয়েছেন।