বাংলাহান্ট ডেস্ক : এখনকার দিনে তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান হওয়া মানেই বাড়ি-গাড়ি-বিপুল সম্পত্তি। এটা আমরা বলছি না, প্রতিদিন খবরের কাগজে চোখ রাখলে এই ধরনের তথ্যই সাধারণত উঠে আসে। কিন্তু এরই মধ্যে উলট পুরান বালুরঘাটে। বালুরঘাটের (Balurghat) তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী হলেও নেননি আবাস যোজনা সুবিধা। কাজ করেন ইটভাটায়। তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাস করেন ভাঙ্গা মাটির ঘরে।
সামান্য এইটুকুতেই খুশি তৃণমূলের (Trinamool Congress) এই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান (Panchayat Pradhan)। যে সময় বঙ্গ রাজনীতি একের পর এক দুর্নীতিতে তোলপাড়, সেই সময় বালুরঘাটের ভাটপাড়ার প্রধান যেন এক ব্যতিক্রমী চরিত্র। মুকুল বর্মন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের ৫ নম্বর ভাটপাড়া পঞ্চায়েত প্রধান। মুকুল বাবুর জীবনযাপন খুবই সাধারণ। সাইকেলে করে রোজ বাড়ি থেকে পৌঁছান পঞ্চায়েত অফিসে।
সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার পর পৌঁছে যান ইটভাটায়। সময় পেলে নিজের সামান্য জমিতে করেন একটু চাষবাস। অফিসের সিল প্যাড সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য সব সময় বহন করেন তিনি। নিজের কাজ করার সাথে সাথেই শংসাপত্রসহ যাবতীয় পরিষেবার কাজ তিনি সম্পন্ন করেন। ভবিষ্যতে নিজের মোটরবাইক কেনার ইচ্ছা রয়েছে মুকুল বাবুর। তবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অবশ্যই সেটি হবে সৎ পথে।
ভাটপাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান মুকুল বর্মন জানিয়েছেন, “ইট ভাটার পাশাপাশি আগে দিনমজুরির কাজ করতাম। সময়ের অভাবে দিনমজুরি এখন আর হয় না। তবে ইট ভাটায় এখনো কাজ করি। এরই সাথে এক বিঘা জমিতে চাষ করি। অফিস-বাড়ির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাজ আমি আমার কাজের ফাঁকেও করে দিই।” আবাস যোজনায় নাম আসা সত্ত্বেও তিনি কেন বাড়ি নেননি?
এই প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বাবু জানান, “গ্রামের অনেকে এখনো বাড়ি পাননি। আমি আগে বাড়ি পেলে লোকে অন্যরকম কথা বলবে। আগে তারা বাড়ি পাক। তারপর আমারটা দেখা যাবে।” মুকুল বাবুর কাজে খুবই খুশি গ্রামের মানুষ। গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান হয়ে তার সাদামাটা জীবন সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। গ্রামের মানুষের ইচ্ছা পরবর্তীতে মুকুল বাবুকে তারা পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে দেখতে চান।