বাংলাহান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রের মধ্যে অন্যতম একটি জেলা হল বীরভূম। রবি ঠাকুরের স্মৃতিধন্য বীরভূমে রয়েছে শান্তিনিকেতন। এছাড়াও বামাক্ষ্যাপার সাধনাস্থল তারাপীঠ এখানেই অবস্থিত। প্রতিবছর বহু মানুষ শান্তিনিকেতন, তারাপীঠ ঘুরতে যান। এছাড়াও বীরভূমের কিছু এলাকা রয়েছে যেগুলি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।
কিন্তু সম্প্রতি বীরভূমের মুকুটে যুক্ত হয়েছে নতুন এক গর্বের পালক। এই গর্ব শুধু বীরভূম নয়, গোটা বাংলার মানুষেরই বলা যেতে পারে। আমখোই সম্পর্কে বীরভূমের বাসিন্দারা নিশ্চয়ই অবগত। বোলপুরের খুব কাছের এই গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে জলের সমস্যায় নাজেহাল ছিল। জলের আশায় পুকুর খনন করার সময় বিশেষজ্ঞরা এখান থেকে পান পেট্রিফাইড কাঠের অবশিষ্টাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পারেন এটি এমন একটি গাছের অংশ যা আজ থেকে ১৫-২০ মিলিয়ন বছর আগে এখানে বিদ্যমান ছিল। প্রকৃতির নিয়মে সেটি হারিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে অ্যাঞ্জিওস্পার্ম (ফুলের গাছ) কাঠ হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন। স্থানীয় বন বিভাগ বলছে, এই অঞ্চলে একটি বিশাল বন ছিল মায়োসিন যুগের শেষের দিকে। এভাবে উদ্ভিদের জীবাশ্ম উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় চারদিকে।
এই ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগে। লখনউয়ের বিখ্যাত বীরবল সাহানি ইনস্টিটিউটে পরীক্ষা করে দেখা যায় এই জীবাশ্মগুলি প্রায় দু কোটি বছর আগের। এই জায়গাটিকে বর্তমানে সংরক্ষণ করা হয়েছে। উড ফসিল পার্ক (Wood Fossil Park) বা আমখোই ফসিল পার্ক হিসাবে পরিচিত এই জায়গাটি। বহু পর্যটক আজকাল বীরভূমে (Birbhum) গেলে ভিড় জমাচ্ছেন এখানে।
সূত্রের খবর এই জায়গাটিকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, এই জীবাশ্ম উদ্ধার প্রমাণ দেয় একটা সময় বিশাল বনের উপস্থিতি ছিল বর্তমান বীরভূম জেলার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রাজমহল পাহাড় এবং ছোট নাগপুর মালভূমির উচ্চভূমিতে। অনুমান করা হচ্ছে এই গাছগুলি ভেসে গিয়েছিল একের পর এক বন্যায়। গাছগুলিকে কাদা-মাটি আচ্ছাদিত করার ফলে এগুলি ধীরে ধীরে জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে।