বাংলাহান্ট ডেস্ক : মজুমদার পরিবারের সদস্যদের এখন চোখে জল। ভারাক্রান্ত মনে তারা দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙা হৃদয় নিয়ে তারা সারলেন প্রিয় সঙ্গীর শেষকৃত্যের কাজ। ছেদ পড়লো ২৫ বছরের সম্পর্কের। মজুমদার পরিবারের সব থেকে প্রিয় সদস্য ভক্তর প্রয়াণে এখন শোকের ছায়া গোটা পরিবার জুড়ে। ভক্তর পরলৌকিক ক্রিয়া দেখতে আসার জন্য মজুমদার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন গ্রামের বহু মানুষ।
চলছে খাওয়া-দাওয়া থেকে স্মৃতিচারণ। ২৫ বছরের ভক্তর নানা মুহূর্তের কথা স্মৃতিচারণা করছেন পরিবারের সদস্যরা। মজুমদার পরিবারের টিয়া (Parrot) পাখির নাম ছিল ভক্ত। মানুষের মৃত্যু হলে যেভাবে হিন্দু মতে পরলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় , ঠিক সেই ভাবেই মজুমদার পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয় পোষ্যর পরলৌকিক ক্রিয়া করছেন।
পরিবারের সদস্যরা চোখের জল মুছতে মুছতে মালা দিচ্ছেন ভক্তর ছবিতে। নিয়ম অনুযায়ী করছেন মন্ত্র পাঠ। ভক্তর মৃত্যুর পর মজুমদার পরিবারের ১৮ সদস্যর জীবনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। হাবরার (Habra) এক নম্বর ওয়ার্ডের আয়রা মাঠপাড়া এলাকায় মজুমদার বাড়িতে গত ২৫ বছর ধরে বাস করছিল ভক্ত। তিন দিন আগে পরিবারের একটি অনুষ্ঠানের জন্য মাইক চালানো হয়েছিল।
সেই মাইকের আওয়াজে অসুস্থ হয়ে পড়ে ভক্ত। এরপর ধীরে ধীরে ভক্তর শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে। পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারেন আর বেশি দেরি নেই। হয়তো হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হবে ভক্তর। সেই আশঙ্কা সত্যিও হলো। ভক্ত টিয়া পাখির মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা তার দেহ নিষ্ঠা সহকারে ভাসিয়ে দেয় গঙ্গায়।
তারই সাথে নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হয় কলার ভেলায় ফুল মালা। হিন্দু ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী পরিবারের সদস্যরা এরপর পালন করেন অশৌচ। এরপর গতকাল পুরোহিত ডেকে নিয়ম অনুযায়ী করা হয় ভক্তর শেষকৃত্য। শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের পর আয়োজন করা হয় মৎস্যমুখীর। চোখে জল নিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানালেন, তারা চান ভক্ত যেন মানুষ হয়ে পরজন্মে এই পরিবারেই জন্মগ্রহণ করে।