বাংলাহান্ট ডেস্ক : “নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান; বিবিধের মাঝে দেখো মিলনও মহান”…নানান সম্প্রদায়ের নানান ধরণের সংস্কৃতি থাকলেও ভারতের এক নিজস্ব ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। ভারতের বহু গ্রাম, শহর, নগরের কথা ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর বুকে। তবে, একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, এদেশের অধিকাংশ শহর বা গ্রামের নামের শেষেই আছে ‘পুর’ (Pur) শব্দটি।
এখন প্রশ্ন হল, এই কথাটির তাৎপর্য কোথায়? উত্তর ভারত থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভারত, এদেশের বিভিন্ন শহর, গ্রামের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে পুর শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন শহরগুলির মধ্যে যেমন- জয়পুর, কানপুর, দুর্গাপুর, বোলপুর, রায়পুর ইত্যাদি শহর রয়েছে। তবে নিশ্চয়ই আপনি কখনো না কখনো ভেবেছেন, এই পুর কথাটির মানে কী?
বৈদিক সংস্কৃত থেকে আগত পুর বা পুরা (Pur or Pura) শব্দের অর্থ নগর বা বসতি। সেই অর্থে ভারতীয় উপমহাদেশে নামের শেষে পুর বসিয়ে কোন স্থান বা বসতি বোঝানো হয়। এককালে বড়সড় বসতি কেই নগর হিসেবে ধরে নেওয়া হতো। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ গ্রামের নামের শেষেও -পুর যুক্ত হতে থাকে।
শুধু তাই নয়, পুর শব্দটির উৎপত্তির কাহিনী দ্রাবিড় ভাষাতেও আছে। বহু ঐতিহাসিকের মতে, পুর কথাটির আক্ষরিক অর্থ হলো দুর্গ। কিছু ভাষাবিদদের মতে, এই শব্দটি আরবি ভাষাতেও ব্যবহৃত হয়। সুতরাং এই কারণে আফগানিস্তান ও ইরানের কিছু শহরের নামে ‘পুর’ শব্দটি রয়েছে। এটি রাজা ও সম্রাটদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায় যে, প্রাচীনকালে অনেক রাজা ও সম্রাট তাদের শহরের নামকরণ করার জন্য তাদের শহরের নামের শেষে পুর শব্দটি যোগ করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, জয়পুর শহরটি তৈরী করেছিলেন রাজা জয় সিং (Jai Singh)। সেইসময় তার নামের সাথে ‘পুর’ যোগ করে শহরের নাম করেন জয়পুর। রাজ্যের রাজধানী ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিকেও ‘পুর’ শব্দটি দিয়ে সম্বোধন করা হতো।