বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে পেট্রোলের (Petrol) দাম বেড়ে যাওয়ায় সবাই চিন্তিত। এমতাবস্থায়, সবাই এখন বিকল্প হিসেবে বৈদ্যুতিক গাড়ির দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আপনাকে এমন একটি বিষয় জানাবো যা জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন। কারণ, এবার এক স্টার্টআপ সংস্থা অল্প খরচেই আপনার পেট্রোল চালিত স্কুটারকেই পাল্টে দেবে বৈদ্যুতিক স্কুটারে। এর জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে মাত্র ২৬,৯৯৯ টাকা (Indian Rupee)। আর এই সুযোগ করে দিচ্ছে জুইঙ্ক রেট্রোফিট, যেটি “বাউন্স”-এর একটি অংশ।
এখনই বুক করুন: এই প্রসঙ্গে জুইঙ্ক রেট্রোফিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট সচিন শেনয়, জানিয়েছেন “এই বিকল্পটি সকলের জন্য সেরা।ধরুন আপনার কাছে একটি সাত বছরের পুরোনো হন্ডা অ্যাক্টিভা আছে এবং আপনি সেটি একটি নতুন ইভি দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে চান, তাহলে এর জন্য আপনাকে ৭০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার মতো খরচ করতে হবে। কিন্তু আমরা সেটিকে মাত্র ২৬,৯৯৯ টাকায় বৈদ্যুতিক স্কুটারে রূপান্তরিত করব।” জানা গিয়েছে, বর্তমানে এই কিটটি ব্যাঙ্গালোরে ৪৯৯ টাকা দিয়ে বুক করা যাবে। জুইঙ্ক রেট্রোফিট ডিসেম্বর থেকে এটি ইনস্টলেশনের কাজ শুরু করবে। এছাড়াও, ওই কোম্পানিটি ২০২২ সালের জুনের মধ্যে দিল্লি, আহমেদাবাদ, পুনে, মুম্বাই এবং হায়দ্রাবাদের মতো শহরে তাদের বিস্তার ঘটাবে।
এতে কি লাভ মিলবে:- শচীন জানিয়েছেন, “পেট্রোল চালিত স্কুটারকে বৈদ্যুতিক স্কুটারে রূপান্তর করার পরে, এক মাসের মধ্যে জ্বালানি খরচ প্রায় অর্ধেক হয়ে যাবে। একজন গ্রাহক একটি পেট্রোল স্কুটারে প্রতি কিলোমিটারে ৩ বা ৩.৫ টাকা খরচ করেন। এমতাবস্থায়, এটিকে বৈদ্যুতিক স্কুটারে পরিণত করলে এই খরচ প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ১.৫ টাকায় নেমে আসবে।” পাশাপাশি, পরিবেশ দূষণ কম হবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে এখনও পর্যন্ত, ওই সংস্থা প্রায় চারটি মডেলের IC-ইঞ্জিনযুক্ত স্কুটার প্রতিস্থাপন শুরু করেছে। যার মধ্যে TVS Scooty Zest, Honda Activa 3G, 4G এবং 5G রয়েছে৷ এগুলি গত দশকে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত হওয়া মডেল। এছাড়াও, সংস্থাটি সুজুকি অ্যাক্সেস, হিরো প্লেজার এবং অন্যান্য স্কুটারের মডেলগুলিতেও কাজ শুরু করবে।
কিভাবে স্কুটারকে ইভিতে রূপান্তর করবেন: শচীন বলেন, “যদি আমরা গ্রাহকদের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে এটা অনেকটা সার্ভিসিংয়ের মত। আপনি সকালে এটি দিয়ে যান এবং বিকেলে তা প্রস্তুত হয়ে যাবে। এছাড়াও প্রথম দিকের গ্রাহকদের জন্য আমাদের কিছু অফার এবং ছাড় রয়েছে। আপনি চাইলে প্রতি মাসে ৮৯৯ টাকার ইএমআইও বেছে নিতে পারেন। আপনি যদি দিনে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার ভ্রমণ করেন, তাহলে EMI দেওয়ার পরেও আপনার খরচ প্রতি মাসে পেট্রোলের খরচের চেয়ে কম হবে।”
সমস্ত উপাদান ভারতে ডিজাইন করা হয়: শচীনের মতে, “এই স্কুটারগুলি সত্যিই মজবুত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার পরেই এই কিট বাজারে আনা হয়েছে। এই রূপান্তরিত স্কুটারগুলি ৬০ কিলোমিটার গতিতে চলে এবং এক চার্জে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। আমাদের দেশেই সমস্তকিছু ডিজাইন করা হয়েছে।”
Battery Swap Technology: এই সমস্ত রূপান্তরিত স্কুটারগুলি জুইঙ্ক রেট্রোফিট দ্বারা প্রস্তুত ব্যাটারি সোয়াপিং প্রযুক্তি দ্বারা চালিত হবে। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্গালোরে ১৫০ টিরও বেশি ব্যাটারি সোয়াপিং স্টেশন রয়েছে। এছাড়াও, কোম্পানিটি ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতি ১ কিলোমিটারে একটি ব্যাটারি সোয়াপিং স্টেশন করার পরিকল্পনা করেছে। শচীন জানিয়েছেন “আমরা গত দেড় বছরে ৩ লক্ষ ব্যাটারি অদলবদল করেছি। আপনি ব্যাটারি ফুরিয়ে গেলে নিকটতম স্টেশনে আবার অদলবদল করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় তিন মিনিটের চেয়েও কম সময় লাগবে।”
নতুন নম্বর প্লেট: জানা গিয়েছে, এই কিটটি নেওয়ার পর গাড়িটির রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রেও সাহায্য করা হবে। যখন আপনার স্কুটার বৈদ্যুতিক রূপে রূপান্তরিত হবে, তখন এটির জন্য একটি নতুন RC লাগবে। এছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য বিশেষ সবুজ ও সাদা নম্বর প্লেটও প্রয়োজন। এর পুরো দায়ভার কোম্পানির ওপর বর্তাবে। তবে রেজিস্ট্রেশন ফি গ্রাহককে দিতে হবে। এই প্রসঙ্গে শচীন বলেছেন, “এই পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগবে।”