বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রিয় দাদুভাইকে অনেক সংঘর্ষ করে মানুষ করেছেন। টোটো চালিয়ে শিখিয়েছেন পড়াশোনা। আর্থিক কারণে যাতে পড়াশোনা বন্ধ না হয়ে যায় তার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছেন দাদু। সেই নাতি এবার পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন খড়গপুর (Kharagpur) আইআইটিতে (Indian Institute of Technology)। নাতির এই সাফল্যে দাদুর আনন্দ দেখে কে!
অভিজিৎ রায় ইংরেজবাজার শহরের গ্রিনপার্ক এলাকার বাসিন্দা। অভিজিতের পড়াশোনা মালদা (Malda) টাউন স্কুলে। অভিজিৎ এবার জেইই অ্যাডভান্স পরীক্ষা দিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছে খড়গপুর আইআইটিতে। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ ফুল, মিষ্টি, লাগেজ ব্যাগ নিয়ে সোমবার হাজির হয়ে যান এই কৃতি ছাত্রের বাড়িতে।
আরোও পড়ুন : এবার খুলবে কপাল? সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA মামলা নিয়ে বিরাট আপডেট
দিলীপ ঘোষ বলেন, “তুমি পড়তে যাবে জিনিসপত্র নিয়ে, তাই তোমার জন্য ব্যাগ। আর আমি বিধায়ক ছিলাম, সাংসদ ছিলাম ওখানে। কোনও চিন্তা নেই। কিছু দরকার হলে আমাকে ফোন করবে।”অভিজিতের দাদু রতন হালদার টোটো চালান শহরের বাঁধ রোডে। রতন বাবুর মেয়ের পুত্র অভিজিৎ। গুরুতর অসুস্থ অভিজিতের মা। আলাদা থাকেন বাবা।
আরোও পড়ুন : মেঘ থাকলেও বৃষ্টি নেই! বর্ষার ‘খেল’ কবে শুরু হবে কলকাতায়? আবহাওয়া দপ্তরের বড় আপডেট
অভিজিৎ ও তার মায়ের সাথে যোগাযোগ রাখেন না তিনি। ছোটবেলা থেকে অভিজিতের ‘ছাদ’ তার দাদু।অভিজিতের এই সাফল্যে বেজায় খুশি রতন বাবু। তিনি বলছেন, “আমি টুকটাক মেসে কয়লা দিই, টোটো চালাই। খুব কষ্ট করে আমি দাদুভাইকে বড় করেছি। খুব ভাল লাগছে ওর এই সাফল্যে। দাদুভাইয়ের মা শয্যাশায়ী। আমাকেই দেখাশোনা করতে হয়। ছেলেটা বড় হোক, মানুষ হোক।”
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ জানান, “গরিব পরিবারের ছেলে ও। বাবা নিরুদ্দেশ, মা অসুস্থ, দাদু টোটো চালিয়ে সংসার চালান। এরকম একটা পরিস্থিতিতে ছেলেটা বড় হয়েছে, পড়াশোনা করেছে, খড়গপুর আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। তাই ওর সঙ্গে দেখা করতে এলাম। ওকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলাম। আর খড়গপুর যেহেতু আমার পুরনো জায়গা, ওখানে কোনও দরকারে সহযোগিতা পাবে, তাও জানিয়ে গেলাম।”
তবে সাফল্য পাওয়ার পরেও উচ্চ শিক্ষা নিয়ে চিন্তিত অভিজিৎ। এই কৃতি ছাত্রের কথায়, “উচ্চশিক্ষার খরচ তো অনেক। আইআইটিতে পড়ার সুযোগ পেয়েছি ঠিকই। তবে সেখানে খরচও প্রচুর। চাইছি সকলে আমার পাশে এসে দাঁড়াক।” অভিজিৎ বলেছেন, “দিলীপবাবু এসেছিলেন। ওনার ফোন নম্বর দিয়ে গেলেন। আমাদের এখানকার যিনি চেয়ারম্যান, তিনিও খুব খুশি। উনিও আমাকে বুধবার ডেকেছেন, পাশে দাঁড়াবেন বলেছেন।”