বাংলাহান্ট ডেস্ক : কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় (Abhjit Ganguly) রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তাঁর সাহসী পদক্ষেপের জন্য। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় যে সব রায় তিনি দিয়েছেন তার কোনও তুলনাই হয় না। এরপর এক গৃহবধূকে তিনি হাজির করলেন আদালতে। সেই মহিলার অপরাধ প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন করেননি তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মৃত স্বামীর চাকরি পেলেও বেতনের সেই টাকা ছুঁয়েও দেখতে দেননি শাশুড়িকে।
নিজের শাশুড়ির দেখাশুনো করার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টই (Kolkata High Court) তাঁকে দিয়েছিল। আদালতের নির্দেশও মানেননি তিনি। এ বার সেই বউমাকে হাই কোর্টে হাজির করানোর জন্য পুলিশের ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার এক আধিকারিককে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ২৯ অগস্ট হাই কোর্টে হাজিরা দিতে হবে ওই মহিলাকে।
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে বজ্রদুলাল মণ্ডলের মৃত্যু হয়। তিনি পেশায় একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর পরিবারে ছিলেন মা, স্ত্রী এবং এক শিশুপুত্র। অবসরগ্রহণের আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাই প্রথামত মৃত স্বামীর চাকরি পান স্ত্রী কৃষ্ণা পাত্র মণ্ডল। চাকরি নেওয়ার সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শককে হলফনামা দিয়ে কৃষ্ণা জানান, বজ্রদুলালের বৃদ্ধা মায়ের দেখাশোনা করবেন তিনি।
চাকরি পাওয়ার পরেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন কৃষ্ণা। শুধু তাই নয় সরাসরি বজ্রদুলালের মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। উপায় না দেখে ২০১৭ সালে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বজ্রদুলালের মা দুর্গাবালা মণ্ডল। হাই কোর্ট কৃষ্ণাকে নির্দেশ দেয়, বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ তাঁর শাশুড়িকে দিতেই হবে।
দুর্গাবালা দেবীর আইনজীবী শৈবাল কুমার আচার্য এবং অনিন্দ্য ভট্টাচার্য জানান, আদালতের নির্দেশের পর প্রথম এক মাস শাশুড়িকে সাত হাজার টাকা দেন কৃষ্ণা। কিন্তু পরে আর কোনও টাকাই দেননি। বাধ্য হয়ে আবার আদালতের দ্বারস্থ হন দুর্গাবালা দেবি। বর্তমান মামলাটি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছে। বিচারপতি কৃষ্ণাকে সশরীরে হাই কোর্টে হাজিরার দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরই সঙ্গে সবং থানার আইসিকেও নির্দেশ দেন, ওই দিন আদালতে যাতে কৃষ্ণা হাজির হন, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকেই।