বাংলা হান্ট ডেস্ক: চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। কার্যত ভেঙে পড়েছে সেখানকার অর্থনীতি। এমনকি, জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম রসদটুকু জোগাড় করতেই রীতিমতো কালঘাম ছুটছে সেখানকার বাসিন্দাদের। এদিকে, ইতিমধ্যেই গোতাবায়া রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পর সেদেশের কার্যকরী প্রেসিডেন্ট হয়েছেন রনিল বিক্রমসিংহে। আইন অনুযায়ী তিনি এই পদে আসীন থাকলেও কয়েক দিন আগে তাঁকেও প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। এমনকি, অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়ে গিয়েছিল যে, তিনি ইস্তফাও দিতে চেয়েছিলেন। যদিও, এখনও তিনি প্রেসিডেন্ট পদে বহাল রয়েছেন।
এদিকে, শ্রীলঙ্কার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছে যে, সংসার চালাতে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য হয়েছেন সেদেশের মহিলারা। এমনকি, বর্তমানে দেশের রাজধানী কলম্বোয় চতুর্দিকে খোঁজ মিলছে নিষিদ্ধপল্লির। মূলত, চরম আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়ে পরিবারকে বাঁচাতে এই পেশাকেই বেচ্ছে নিচ্ছেন মহিলারা। আগে যেগুলি আয়ুর্বেদিক স্পা ছিল এখন সেখানেই মিলছে মধুচক্র। এমনকি, দোকানে গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে গেলেও শরীর বিক্রি ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকছে না তাঁদের কাছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কা জুড়ে কাজ হারানোর মুখে রয়েছেন হাজার হাজার বয়নশিল্পী। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। এদিকে, গত কয়েক মাসে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রীলঙ্কার বস্ত্রশিল্প। মূলত, এই পরিস্থিতিতে সেদেশের সঙ্গে ব্যবসার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ভরসা পাচ্ছেন না বিদেশিরা। এমনকি, ভারত কিংবা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের হাতে চলে আসছে অধিকাংশ বরাত। যার ফলে, বস্ত্রশিল্পের কর্মীদের ছাঁটাইপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এমতাবস্থায়, পরিবারের খরচ চালাতে দেহ ব্যবসায় নাম লেখাচ্ছেন মহিলারা। এমনকি, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, মুদির দোকান থেকে সাধারণ সামগ্রী কিনতে গেলেও তাঁদের শরীর বিক্রি করতে হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা কর্মী জানিয়েছেন যে, “বস্ত্রশিল্পের সাথে যুক্ত থাকলে প্রতি মাসে ২৮ হাজার টাকা বেতন পেতাম। পাশাপাশি, সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার টাকা বেতন পেতাম। কিন্তু এখন দেহব্যবসার মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার টাকা আয় করি। এই বিষয়ে অনেকেই আমার সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন। এখন দোকান থেকে কোনো জিনিস কিনতে গেলেও বহু মহিলাকে জোর করে সঙ্গমে বাধ্য করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, এই দুর্বলতাকেই আমরা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছি। পাশাপাশি, আমাদের পরিবার চালাতে বিকল্প পেশা খোঁজা ছাড়া আর উপায়ও ছিল না।”