বাংলাহান্ট ডেস্ক : একেই বলে বিনা মেঘে বজ্রপাত। মাত্র ঘন্টা খানেকের নোটিসেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে ঘর ছাড়তে হয়েছে তাঁদের। সৌজন্যে মেট্রো রেল। রাতে হোটেলে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিললেও মেলেনি খাবার টুকুও। তাই শিশু এবং বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে নিয়েই কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছেন বউবাজার এলাকার বাসিন্দারা।
মেট্রোরেলের কাজ চলছে বউবাজার এলাকায়। সেই কাজের জেরেই বুধবার সন্ধ্যে নাগাদ বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের বেশ কয়েকটি বাড়িতে দেখা দেয় বড়সড় ফাটল। সেই আতঙ্কেই যৎসামান্য সম্বলটুকু নিয়েই ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ওই বিপজ্জনক বাড়ি গুলির বাসিন্দারা। মেট্রো রেলের তরফে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয়েছে ক্রিক রো এর হোটেল কিউ ইন এবং গণেশ চন্দ্র অ্যাভিনিউর ব্রডওয়ে হোটেলে।
কিন্তু ক্ষোভে ফুঁসছেন ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়া গেরস্তরা। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতন ঘর ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু মিললেও মেট্রো রেলের তরফে বাসিন্দাদের খাবারের কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। মাঝরাতে ঘর ছেড়ে রীতিমতো অনাহারেই রাত কাটাতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় এক মহিলার কটাক্ষ সহ অভিযোগ, ‘আমরা তো হোটেলে খেতে যেতে পারি না। সেই কারণেই আমাদের মাঝেমধ্যে হোটেলে নিয়ে আসে ওরা।’ অপর আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘মাঝ রাতে হঠাৎ করেই এক ঘন্টার নোটিসে ঘর ছাড়তে হয়েছে। কী অবস্থা ভাবুন তো আমাদের। বয়স্ক মানুষজন, বাচ্চা সবাই সঙ্গে ছিল। মেট্রো একটাবারও এটা ভাবল না যে কী খাবেন মানুষগুলো।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১৯ সালে একই ভাবে একই জায়গায় দেখা দিয়েছিল ফাটল। সেবারও বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছিল ওই এলাকার বাসিন্দাদের। কিন্তু বারবার একই এলাকায় এই ফাটল কেন? নির্মাণ বিশেষজ্ঞ পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের দাবি, ‘ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের ফলে বাড়িগুলির নীচে থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। এখানে মাটি এতটাই ভারী যে যন্ত্রাংশ গুলি ব্যবহারেও সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই এই ঘটনা ঘটে চলেছে।’ বাড়ির বাসিন্দাদের আগামী ৭২ ঘন্টা নিরাপদ আশ্রয়ে অন্যত্রই থাকা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।