১৬ বছরে এই প্রথম! কালবৈশাখী ছাড়াই গোটা চৈত্র মাস দেখলো পশ্চিমবঙ্গ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: চৈত্র মাসের সাথে কালবৈশাখীর প্রসঙ্গ যেন একে অপরের পরিপূরক। চৈত্রের বিকেলে হঠাৎ করে ঘন কালো মেঘের সাথে ঝোড়ো হাওয়ায় পাল্লা দিয়ে বৃষ্টি দেখতেই অভ্যস্ত রাজ্যবাসী। গ্রামে-গঞ্জে তো আবার এই সময়ে ধুম ওঠে আম কুড়োনোর। পাশাপাশি, চারিদিক ভরে ওঠে সোঁদা মাটির গন্ধে। কিন্তু, চলতি বছরে কার্যত এই দৃশ্য থেকেই বঞ্চিত থাকল বাংলা।

শুধু তাই নয়, সম্প্রতি সামনে এসেছে অবাক করা এক তথ্যও। যা শুনলে অবাক হবেন সকলেই! পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বিগত ১৬ বছরে এই প্রথমবার চৈত্র মাসে কালবৈশাখী ঝড়ের মুখ দেখল না বঙ্গবাসী। এর আগে ২০০৬ সালে এমন অবস্থা হয়েছিল। তারপর ফের চলতি বছরে সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। অবশ্য এর পেছনে উঠে আসছে একাধিক কারণ।

চলতি বছরের চৈত্র মাসে কেন হলনা কালবৈশাখী?
চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিল মাস অর্থাৎ বাংলার চৈত্র মাসে কালবৈশাখী না হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে যেটি উঠে আসছে সেটি হল উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য ভারত জুড়ে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে গরমের প্রভাব। মূলত, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে বায়ুর চাপ থাকায় পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তরের দিকে চলে গিয়েছে। তাই সিকিমের মতো অংশে ঝড়বৃষ্টি হলেও দেশের একটা বিস্তীর্ণ অংশ বৃষ্টিহীন থেকে গিয়েছে।

এছাড়াও, গরমকালে “লা নিনা”-র প্রভাব থাকে। যার ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। সাধারণত আমরা দেখেছি যে, কলকাতায়, মার্চ মাসে গড়ে একবার এবং এপ্রিল মাসে গড়ে চার থেকে পাঁচবার ঝড়বৃষ্টি হয়। মে মাসে এই সংখ্যাটাই হয়ে যায় গড়ে তিনবার। তবে, চলতি বছরে এপ্রিল মাস শেষ হতে চললেও কলকাতায় সেই সংখ্যা এখনও পর্যন্ত শূণ্যতেই থেকে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৬ সাল নাগাদ ঠিক এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেবছর গোটা মার্চ মাসে কালবৈশাখী না হলেও ১৪ এপ্রিল ঝড়বৃষ্টি হয়। কিন্তু, এবারের পরিস্থিতি সেই রেকর্ডকেও কার্যত ছাপিয়ে গিয়েছে।

কি বলছে হাওয়া অফিস:
তবে, এই তীব্র দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে কিছুটা হলেও আশার খবর শোনাচ্ছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, বর্তমানে আমাদের রাজ্যের উপর দু’টো নিম্নচাপ অক্ষরেখা অবস্থান করছে। একটি পূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত এবং অন্যটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছত্তিশগঢ় পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

he k5hE

এদিকে, এই অক্ষরেখার ফলে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, ২০ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে কলকাতা এবং সংলগ্ন অঞ্চলেও ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও, উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি ৪০-৫০ কিমি বেগে দমকা হাওয়াও বইতে পারে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর