বর্তমান যুগে জিও পলিটিক্সে কূটনৈতিক নামক যে বিষয়টি রয়েছে তা অত্যন্ত জটিল ও সংবেদনশীল। মাত্র একটা সিদ্ধান্ত নিতে হলে তার পতিক্রয়ার উপর হাজারবার চিন্তা করতে হয়। কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তার প্রভাব পরে কি হবে, প্রভাব ভালো হবে নাকি খারাপ হবে, সমস্তকিছু ভেবেই দেশগুলি কূটনৈতিক নির্ণয় করে। কিন্তু কোনো ভাবনা চিন্তা না করে চুপচাপ বসে থাকা হাতির সাথে বিনা কারণে টক্কর নিলে পরিনাম কি হতে পারে তা আজ তুর্কী ও মালয়েশিয়াকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ভারতের সাথে বিনা কারণে টক্কর নিতে গিয়ে তুর্কী ও মালেশিয়াকে যেভাবে ভুগতে হচ্ছে তা সবার সামনে স্পষ্ট।বর্তমান সময়ে ধর্মের নাম করে রাজনীতি চললেও, কূটনৈতিক বা অর্থনীতিতে ধর্মের কোনো প্রভাব নেই।
কিন্তু এটা বুঝতেই তুর্কী ও মালেশিয়া বুঝতে দেরি করেছে। কাশ্মীর থেকে ধারা ৩৭০ তুলে দেওয়ার পর সমস্থ ইসলামিক দেশ ভারতের সাথ দিয়েছে। একমাত্র ইসলামের নামে পাকিস্তানের সাথ দিয়ে মালেশিয়া ও তুর্কী নিজের পায়ে কুলুড় মেরেছে। মালেশিয়ার পাম্প অয়েলের আমদানি ভারত প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। এখন মালয়েশিয়ার সরকার ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আওয়াজ তুলেছে। ভারতের তরফ থেকে পাল্টা কোনো প্রতিক্রিয়া যায়নি। অন্যদিকে ভারত এবার তুর্কিকে শিক্ষা দিতে মাঠে নেমে পড়েছে। ভারত থেকে ব্যাপক সংখ্যায় পর্যটক তুর্কী যায়। সেখান থেকে তুর্কী একটা মোটা অনেকের টাকা আয় করে। তুর্কীতে পরিস্থিতি খারাপ এই বাহানা দিয়ে ভারত সরকার পর্যটকদের জন্য এডভাইজারি জারি করেছে।
অর্থাৎ সরকার ভারতের জনগণকে অনুরোধ করেছে তুর্কী যাত্রা থেকে দূরে থাকার জন্য। যদিও এখনও অবধি তুর্কীকে ভারতীয় নাগরিকদের সাথে কোনো অঘটন ঘটার খবর পাওয়া যায়নি। সেই দৃষ্টিকোন থেকে এটা ভারত সরকার জেনে বুঝেই তুর্কীকে চাপে ফেলার জন্য করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগে ভারত সরকার তুর্কীর সাথে ২.৩ বিলিয়ন ডলারের একটা চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারত সরকার একশন মুডে রয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গোলানো দেশগুলিকে কোনোভাবেই ছাড়া হবে না, তার সংকেতও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আগামী সময়ে মালয়েশিয়ার যাত্রার উপরেও সরকার এডভাইজারি জারি করতে পারে। মালেশিয়া ও তুর্কী দুই দেশ পর্যটনের জন্য ভারতের থেকে ভালো আয় করে। কিন্তু এখন সেই সব আয় ভেস্তে দেওয়া মুডে রয়েছে ভারত সরকার। মালেশিয়া ও তুর্কী ইসলামের নামে কূটনীতি করতে গিয়ে নিজের নিজের দেশকে সমস্যায় ফেলেছে। ভারত এখন আর্থিক ও সামরিক দুই দিক থেকেই মজবুত। সেক্ষেত্রে ছোটো দেশগুলির উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা লাগানো কোনো বড়ো ব্যাপার নয়। ভারত অনেক বড়ো বাজার হওয়ায় আর্থিকভাবে বড়ো বড়ো দেশগুলিকেও সমস্যায় ফেলার ক্ষমতা রাখে।