বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ ভারতীয় দল (Indian Cricket Team) রবিবার এশিয়া কাপের (2023 Asia Cup) ফাইনাল খেলতে নামবে। বৃহস্পতিবারের আগে এই নিয়ে অনেক চর্চা দেখা গিয়েছে। পাকিস্তান নাকি শ্রীলঙ্কা? ফাইনালে কাকে পেলে ভারতের জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে? এই মুহূর্তে পাকিস্তান দল অনেকটাই ভাঙাচোরা। চোটের জন্য দল থেকে ২ তারকা পেসার ছিটকে গিয়েছেন। সুপার ফোরের ম্যাচেও পাকিস্তানকে শহরেই হারিয়েছিল ভারত। অপরদিকে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে ভারতীয় দলকে রীতিমত বেগ পেতে হয়েছিল। তাদের স্পিনার, তাদের মিডল অর্ডার ব্যাটারের লাইন যে প্রশ্নগুলি ভারতের দিকে ছুড়ে দিয়েছিল তার জবাব দিতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছিলেন রোহিত শর্মারা। এবার এই সমস্যার মুখোমুখি বিশ্বকাপের আগে আরো একবার হতে হবে তাদের। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেয়ে গিয়েছে গতবছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজিত এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়নরা।
যদিও এই দুর্বল পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও দ্বীপরাষ্ট্রের লড়াইটা খুব একটা সোজা হয়নি। শ্রীলঙ্কার হাতের মুঠোয় থাকা একটা ম্যাচ শেষ ৭ ওভারে ৫ উইকেট নিয়ে জমিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। আর তার পেছনে কৃতিত্ব অনেকটাই ছিল আফ্রিদির। ১২ বলে ১২ রান বাকি এমন অবস্থায় পেনাল্টিমেট ওভারে বল করতে আসা এবং ভারত ম্যাচে শ্রীলঙ্কার জার্সিতে প্রায় নায়কে পরিণত হওয়ার ২ ব্যাটার, ধনঞ্জয় ডি সিলভা এবং ওয়েলালাগাকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের ঝুলিতে ম্যাচটা এনে দিয়েছিলেন শাহীন।
যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ওডিআই ম্যাচ খেলতে নামা পাকিস্তানি মালিঙ্গা বলে পরিচিত জামান খান। আফ্রিদি ও তার দাপটে ১২ বলে জয়ের জন্য ১২ রান বাকি থাকা শ্রীলঙ্কার সামনে লক্ষ্য তখন ২ বলে ৬। ঠিক এই সময়টা ভাগ্য সঙ্গ দিলো আশালঙ্কাকে। জামালের বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভস এড়িয়ে তীব্র গতিতে গিয়ে পৌঁছল বাউন্ডারিতে। এরপর শেষ বলে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের পরিকল্পনা ঠিক কি ছিল তা স্পষ্ট হলো না। জামান বল ফেললেন লেগস্টাম্পের ওপর। লেগ সাইডের বিশাল অরক্ষিত অঞ্চলে বল ঠেলে দিয়ে দৌড়ে ২ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে জয় ও ফাইনালে টিকিট এনে দিলেন গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা এই অলরাউন্ডার।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া পাকিস্তানের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ধীর গতিতে একটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। এর মাঝে বৃষ্টি আবার বিভিন্ন ঘটায় ম্যাচে। টস করতে এমনিতেই দেরি হয়েছিল বলে ম্যাচটি হচ্ছিল ৪৫ ওভারের। মাঝে ফের বৃষ্টি আশায় ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় ৪২ ওভারের। শ্রীলঙ্কার হয়ে পাথিরানা ৩ উইকেটে নিলেও খরুচে বোলিং করেছিলেন। মহম্মদ রিজওয়ানের ৭৩ বলে ৮৬ এবং ইফতিকার আহমেদের ৪০ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে ভর করে ২৫২ রান তোলে পাকিস্তান। এরপর ডিএল মেথডের কারণে শ্রীলঙ্কার টার্গেট ২৫৩ রানের বদলে দাঁড়ায় ২৫২।
আরও পড়ুন: হবে না ভারত-পাক! আফ্রিদিদের মরিয়া লড়াইকে হার মানিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে তুললেন আশালঙ্কা
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। পেরেরা (১৭) ও পাথুম সিলভা (২৯) বড় ইনিংস না খেলতে পারলেও কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে ভর করে এগোচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন চলতে টুর্নামেন্ট ব্যাট হাতে ভালো ছন্দে থাকা সমরবিক্রমা (৪৮)। শ্রীলঙ্কার জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু ৩০ থেকে ৩৮ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে চিত্রটা বদলে দেন ইফতিকার আহমেদ। ব্যাটের পর বল হাতেও জ্বলে ওঠেন তিনি। আফ্রিদিও তাকে নিজের শেষ স্পেলে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিলেন। কিন্তু চারিথা আশালঙ্কার (৪৯*) নাছোড়বান্দা মনোভাবে ভর করে শেষপর্যন্ত নাটকীয় ম্যাচ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর জিতে নেয় দ্বীপরাষ্ট্রের। গতবছরের চ্যাম্পিয়নরা রবিবার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতীয় দলের।