ভারতে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে “ডার্ক ট্যুরিজম”, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কেন বাড়ছে এই ভ্রমণের আগ্রহ?

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ডার্ক ট্যুরিজম! জেন জেডের কাছে এযেন ভ্রমণের এক নতুন সংজ্ঞা। ‘ট্যুরিজম’ শব্দটার সঙ্গে সবাই পরিচিত হলেও আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এখনও পর্যন্ত ভারতের (India) বহু মানুষেরই ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। এককথায় বলতে গেলে, ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ কথার অর্থ ‘ভয়াবহ পর্যটন’। ১৯৯৬ সালে প্রথম ইংরেজি ভাষায় এই শব্দবন্ধটির ব্যবহার শুরু হয়।

ডার্ক ট্যুরিজম নিয়ে অন্ধকারে ভারত (India)

এখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার মনে হতে পারে, যেখানে ট্যুরিজম বা ভ্রমণ মনের আনন্দ খুঁজে নেওয়ার একটি পথ, সেখানে ‘অন্ধকারের’ মত একটি নেগেটিভ শব্দ কিভাবে যুক্ত হল? তাহলে বিষয়টা একটু খোলসা করেই বলা যাক। জানা গিয়েছে, গ্ল‌াসগো ক‌্যালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ‌্যালয়ের পর্যটন বিভাগে কর্মরত দুই বন্ধু লেনন এবং ফোলের সৌজন্যেই এই ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ ভাবনার সূত্রপাত।।

আরও পড়ুন : ১৫ বছর অতীত! এবার বাড়ছে বাণিজ্যিক গাড়ি ব্যবহারের সময়সীমা? চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য

তাঁদের মনে হয়েছিল, পর্যটনের সঙ্গে ভয়ঙ্কর বিপদ, মৃত্যুভয়, প্রাণনাশের আশঙ্কা, চরম অত‌্যাচারের গল্প, এমনকী পর্যটকদেরও ক্ষতির সম্ভাবনা– এসব টেনশন মেশাতে পারলেই পর্যটনের বাণিজ্যিক দিকটি আরও উন্নত হবে। তারপর থেকেই ঐতিহাসিক যুদ্ধক্ষেত্র, দুর্যোগপূর্ণ এলাকা, ভূতুড়ে জায়গা এবং মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের নামই হয়ে গিয়েছে ডার্ক ট্যুরিজম (Dark Tourism)।

আরও পড়ুন : শুরু হতে চলেছে কলিঙ্গ সুপার কাপ! কবে হবে কলকাতা ডার্বি? জানুন পূর্ণাঙ্গ সূচি

পাশাপাশি একটা কথা বলা যায়, ভারতেও (India) আজকের জেনারেশনের মধ্যে এমন জায়গা পরিদর্শনের ইচ্ছে বাড়ছে যে স্থানগুলো কেবল পর্যটন কেন্দ্রই নয় বরং ইতিহাসের বাস্তবতাও তুলে ধরে। এদিকে ‘ডার্ক ট্যুরিজম’ মানুষকে অতীতের ঘটনা এবং তাদের প্রভাব বোঝার সুযোগ দিচ্ছে বলেই তরুণ প্রজন্ম প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও ভ্রমণের মধ্যে ‘ট্রাজেডির চিহ্ন’ খুঁজে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় সেই সমস্ত জায়গার ছবিও তারা তুলে আনছে।

India dark tourism and significance

ভারতের (India) কিছু বিখ্যাত ডার্ক ট্যুরিজম স্থান

ডুমাস সৈকত, সুরাট – কালো বালি দিয়ে ঢাকা এই সৈকতটি আরব সাগরের তীরে অবস্থিত। ভৌতিক ঘটনার জন্য পরিচিত এই সৈকতটি জেনজেডের ভীষণ পছন্দের।

শনিওয়ারওয়াড়া, পুনে – এই ঐতিহাসিক দুর্গটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে পেশোয়াদের কাহিনি। কথিত আছে, এখানকার করিডোরগুলিতে নারায়ণরাও পেশোয়ার আত্মার আর্তনাদ এখনও শোনা যায়।

জালিয়ানওয়ালাবাগ, অমৃতসর – ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী এই স্থানটি আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেবে আমাদের নিরীহ মানুষের আত্মত্যাগ এবং ব্রিটিশ শাসনের বর্বরতার কথা।

কুলধারা , জয়সলমীর – জনশূন্য এই গ্রামটি ভীষণ রহস্যময়। শোনা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীতে রাতারাতি এই এলাকার বাসিন্দারা পরিত্যক্ত করে দিয়েছিল। অধিকাংশ মানুষই মনে করেন এই গ্রামটি অভিশপ্ত।

সেলুলার জেল, পোর্ট ব্লেয়ার – কালাপানি নামে পরিচিত এই জেলটির প্রতিটি কোণে মিশে আছে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নৃশংসতা এবং সংগ্রামের গল্প।

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, কলকাতা – এই অসাধারণ স্মৃতিস্তম্ভটিও কিন্তু ডার্ক ট্যুরিজমের অংশ। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতীয়দের যে কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তার নির্দশন রয়েছে এখানে।

রূপকুণ্ড হ্রদ, উত্তরাখণ্ড – এখানে হাজার হাজার বছরের পুরনো মানব কঙ্কাল পাওয়া যায়, যার রহস্যময় মৃত্যু আজও একটি ধাঁধা হিসেবে রয়ে গিয়েছে। কঙ্কাল হ্রদ নামে বিখ্যাত এই জায়গাটি।

 

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

X