বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: প্রত্যাশামতোই হংকংয়ের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জয় পেল ভারতীয় দল। যদিও এই জয়ে যতটা সহজ দেখিয়েছে অতটা সহজ ছিলো না। মূলত বিরাট কোহলি এবং সূর্যকুমার যাদব এর পার্টনারশিপে এই ম্যাচে এতটা বড় তফাৎ করে দেয়। গোটা ম্যাচে প্রথম ইনিংসের শেষ কয়েকটি ওভার বাদ দিয়ে ভারতের সঙ্গে বেশ ভালোই টক্কর দিয়েছেন আয়ুস শুক্লারা। কিন্তু শেষপর্যন্ত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তারা ৪০ রানের ব্যবধানে হার স্বীকার করতে বাধ্য হলেন। হার্দিক পান্ডিয়াকে বিশ্রাম দিয়ে আজ রিশভ পন্থকে দলে সামিল করেছিলেন রোহিত শর্মা। কিন্তু পন্থকে আজ বিশেষ কিছুই করতে হয়নি।
আজ রোহিত শর্মা ব্যাট হাতে খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। যদিও শুরুটা অত্যন্ত ঝোড়ো গতিতে করেছিলেন তিনি। কিন্তু ১৩ বলে ২১ রান করে আউট হওয়ার সময় একটি অনন্য রেকর্ড গড়ে ফেলেছিলেন হিটম্যান। দেশের জার্সি গায়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হিসেবে তিনি ৩৫০০ রানের গন্ডি অতিক্রম করে গিয়েছেন। কিন্তু রোহিত ঝোড়ো ব্যাটিং করলেও অফফর্মে থাকা লোকেশ রাহুল আজ অত্যন্ত ধীরগতিতে ব্যাটিং করছিলেন। কোহলি এসেও সেট হতে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে ফেলেন। দুর্বল হংকংয়ের বিরুদ্ধে একটা সময় ভারতীয় দল ওভার প্রতি সাতেরও কম রান রেট নিয়ে চলছিল। রাহুল একসময় পরপর দুটি ছক্কা মারলেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি। ৩৯ বল খেলে ৩৬ রান করে আউট হন তিনি। এরপর মাঠে আসেন সূর্যকুমার যাদব এবং পরপর দুটি দুর্দান্ত সুইপে ৮ রান কুড়িয়ে নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দেন।
সূর্যকুমার যাদবের তাণ্ডব থেকে ধীরে ধীরে হাত খুলতে শুরু করেন বিরাট কোহলিও। বেশকিছু দৃষ্টিনন্দন শট খেলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন কোহলি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এটি ছিল তার ৩১তম অর্ধশতরান। কিন্তু কহলি অর্ধশত রান করলেও তার ওপর থেকে যাবতীয় পাদপ্রদীপের আলোয় ছিনিয়ে নেন ফর্মে থাকা সূর্যকুমার। দুর্বল হংকংয়ের বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান স্কাই।
সাধারণ ব্যাটিং করে মাত্র ২২ বলে নিজের অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেছিলেন সূর্যকুমার। ভারত একসময় ১৬০ রান তুলতে পারবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ হচ্ছিল। কিন্তু নিজের ব্যাটে ভর করে সেই স্কোরকে দুশোর কাছাকাছি নিয়ে আসেন স্কাই। ২০ ওভারে ১৯২ রান তোলে ভারত। লোকেশ রাহুল যদি শুরুর দিকে অতটা ধীরগতিতে ব্যাটিং না করতেন তবে সহজেই দুশোর গণ্ডি অতিক্রম করতে পারতো মেন ইন ব্লুজ। হংকংয়ের হয়ে শেষ ওভারে বল করতে আসা আর্ষদ মোহাম্মদের ওভারে চারটি ছক্কা সহ ২৬ রান করেন তিনি। ৬টি ছক্কা এবং ৬টি চার মেরে ২৬ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৪৪ বলে ৫৯ রান করে অপরাজিত থাকেন কোহলিও।
রান তাড়া করতে নেমে ওপেনারদের তাড়াতাড়ি খোয়ালেও বাবর হায়াত (৪১) এবং ২০১৮ এশিয়া কাপেও ভারতের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা কিঞ্চিৎ শাহ (৩০) বেশ কিছুক্ষণ দুরন্ত ব্যাটিং করছিলেন। কিন্তু দুশোর কাছাকাছি একটি টার্গেট চেজ করতে গেলে যে মারাত্মক আগ্রাসী ব্যাটিং করতে হয় সেটা কখনোই করতে পারেনি হংকংয়ের ব্যাটারা। শেষ পর্যন্ত কুড়ি ওভার ব্যাটিং করে তারা পাঁচ উইকেট খুইয়ে তোলে ১৫২ রান। ৩ ওভার বল করে ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পান ভুবনেশ্বর কুমার। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে সমসংখ্যক রান দিয়ে ১টি উইকেট পেয়েছেন জাদেজাও। তাছাড়া একটি দুরন্ত থ্রোয়ে এক হংকং ওপেনারকে আউট করেছেন তিনি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন অর্শদীপ এবং আবেশও। কিন্তু ভারত জিতলেও লোকেশ রাহুলের ফর্ম আর ভুবনেশ্বর কুমার বাদে বাকি ভারতীয় পেসারদের রান বিলিয়ে যাওয়ার ঘটনা বড় ম্যাচের আগে বেশ চিন্তা দেবে রোহিতকে। তবে আজকে জয়ের পর আফগানিস্তানের পরে দ্বিতীয় দল হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে ভারতের।