মিলবে না পানীয় জল, হবেনা চাষাবাদ! ভারতের এই কড়া পদক্ষেপেই “খেল খতম” পাকিস্তানের

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কাশ্মীরের পাহেলগাঁও-তে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা ঘটে। তারপরেই রীতিমতো গর্জে ওঠে সারাদেশ (India)। শুধু তাই নয়, ওই নৃশংস হামলার পরের দিন অর্থাৎ বুধবার সন্ধ্যেতেই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নিরাপত্তা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক সম্পন্ন হয়। আর সেখানেই কেন্দ্রীয় সরকার সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেটি নিঃসন্দেহে, প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের জন্য মোক্ষম ধাক্কা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

পাকিস্তানকে মোক্ষম ঝটকা দিল ভারত (India):

এর পাশাপাশি, ভারতে (India) পাকিস্তানি দূতাবাস বন্ধ রাখা এবং কোনও পাকিস্তানিকে ভারতীয় ভিসা না দেওয়ার ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়াও, আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা সিন্ধু জলবন্টন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করব। তার আগে প্রথমেই জেনে নিতে হবে সিন্ধু জলবন্টন চুক্তিটি ঠিক কী?

India has put Pakistan in a dire situation.

সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি: জানিয়ে রাখি যে, ভারত (India) ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রবাহিত সিন্ধু নদ এবং তার উপনদী গুলির জলবন্টন করে নেওয়ার জন্য ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারত এবং প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যেটি সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই চুক্তিটি সম্পন্ন হয় বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায়। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল, সিন্ধু নদ এবং তার উপনদীগুলির জল দুই দেশের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া।

সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, দীর্ঘ ৯ বছরের আলোচনার পর ১৯৬০ সালে এই চুক্তিটি সম্পন্ন হয়। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর করাচিতে ভারতের (India) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ও পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সিন্ধু নদ মোট ৬ টি নদী নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে রয়েছে, সিন্ধু, শতদ্রু, ঝিলাম, চেনাব রবি এবং বিপাশা। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী, ভারত সিন্ধু নদের মাত্র ২০ শতাংশ জল ব্যবহার করতে পারে। অপরদিকে ৮০ শতাংশ জল দেওয়া হয় পাকিস্তানে।

আরও পড়ুন: “গাজাকে ইজরায়েল শেষ করেছে, আমরাও ওদের শেষ করবো”, কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি বন্ধের ফলে কীভাবে প্রভাবিত হবে পাকিস্তান: ইতিমধ্যেই ভারতের (India) তরফে সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরফলে ভারত পাকিস্তানের সিন্ধু নদের জলের প্রবাহ বন্ধ করবে। যার ফলে সঙ্কটের সম্মুখীন হবে পাকিস্তান। মূলত, এই চুক্তির মাধ্যমে সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ। সিন্ধু নদী পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আরব সাগরে মিশেছে। এমতাবস্থায়, এই চুক্তি বন্ধ হওয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানের কৃষিও যথেষ্ট প্রভাবিত হবে। যার ফলে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও হিমশিম খাবে পড়শি দেশ। ২১ কোটিরও বেশি পাকিস্তানি জনসংখ্যার জলের চাহিদাও সিন্ধু নদের ওপর নির্ভরশীল। এমতাবস্থায়, এই চুক্তির বন্ধের মাধ্যমে ওই দেশে পানীয় জলের সঙ্কট মাথাচাড়া দেবে।

চরম সঙ্কটের সম্মুখীন হবে পাকিস্তান: এদিকে, এর প্রভাবে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে স্থিত প্রায় ১৭ লক্ষ একর জমি জলের অভাবে ভূমিতে পরিণত হতে পারে। যার ফলে পাকিস্তানে বৃদ্ধি পাবে অনাহার। এমনিতেই, ওই দেশ বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে খাদ্যের সঙ্কটও। ঠিক এই আবহেই ভারতের (India) নেওয়া এই পদক্ষেপ তাদের বড়সড় ধাক্কা দেবে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাথে আর নয় ক্রিকেট? পহেলগাঁও হামলার পর কী জানাল BCCI?

গতবছর নোটিশ পাঠিয়েছিল ভারত: সিন্ধু জলবন্টন চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিবছর সিন্ধু জল কমিশনের বৈঠক হওয়ার কথা। গত বছরের অগাস্ট মাসেই সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য পাকিস্তানকে নোটিশ পাঠিয়েছিল ভারত (India)। পরিস্থিতির মৌলিক এবং অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনের কারণে চুক্তিটি আবার পর্যালোচনা করা দরকার। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মিডিয়ার ওপরে দাবি করা হয়েছিল যে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসই ওই নোটিশের আসল কারণ ছিল। তবে, এবার আর দেওয়া হল না ছাড়। গত মঙ্গলবারের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে কড়া পদক্ষেপ নিল ভারত।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X