বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাশিয়া (Russia) থেকে অত্যন্ত সস্তায় ক্রমাগত অপরিশোধিত তেল (Crude Oil) কিনছে ভারত (India) ও চিন (China)। এই প্রসঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (IEA)-র রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত মে মাসে রাশিয়া তার মোট রফতানির ৮০ শতাংশ ভারত ও চিনে রফতানি করেছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ভারত এবং চিন উভয় দেশই বিশ্বের দু’টি বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল আমদানিকারী দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এদিকে, এক সময় রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির পরিমাণ প্রায় ছিল না বললেই চলে। কিন্তু এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ২০ লক্ষ ব্যারেলের রেকর্ড পর্যায়ে। অন্যদিকে চিনের কথা বললে সেদেশের আমদানি দৈনিক ৫ লক্ষ ব্যারেল থেকে বেড়ে ২২ লক্ষ ব্যারেল হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
এপ্রিল মাসের তুলনায় রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানির পরিমাণ ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা রাশিয়া থেকে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রেও একটি নতুন রেকর্ড। এর আগে রাশিয়া থেকে তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ইউরোপ। তবে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ইউরোপ। এখন রাশিয়ার ৯০ শতাংশেরও বেশি তেল এশিয়ায় আমদানি করা হচ্ছে।
করা হয়েছে সুযোগের সদ্ব্যবহার: উল্লেখ্য যে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এদিকে, রাশিয়াও ছাড় দিয়ে অপরিশোধিত তেল বিক্রি শুরু করে। এই সুযোগটাই কাজে লাগায় ভারত ও চিন। উভয় দেশই রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অপরিশোধিত তেল কিনছে। গত বছরের ডিসেম্বরে ইউরোপিয় ইউনিয়ন রাশিয়া থেকে সব ধরণের সি-বর্ন ক্রুড অয়েলের আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এর ঠিক দু’মাস পর রাশিয়া থেকে আসা পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিও নিষিদ্ধ করা হয়।
এমতাবস্থায়, আমেরিকা ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার পরেও ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে ভর্তুকি দিয়ে বিপুল পরিমাণে অপরিশোধিত তেল কিনছে। ব্লুমবার্গের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাশিয়ার পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর ইউরোপিয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার পর ভারতের পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্যের রফতানি ক্রমাগত বেড়েছে।
দাম কি কমতে পারে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, আমাদের দেশে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশে পেট্রোল এবং ডিজেলের দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এদিকে, সম্প্রতি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি জানান যে, পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, যদি অপরিশোধিত তেলের দাম স্থিতিশীল থাকে, সেক্ষেত্রে অয়েল মার্কেটিং কোম্পানিগুলি (OMCs) পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এছাড়াও, মন্ত্রী আরও জানান, আগামী ত্রৈমাসিকে যদি এই সংস্থাগুলির পারফরম্যান্স ভালো হয় তাহলে তারা পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম কমানোর ক্ষেত্রে আরও ভালো অবস্থানে থাকবে।