বাংলা হান্ট ডেস্ক: গোটা বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলেছে। এমনকি, আমেরিকাতেও মন্দার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শেয়ার বাজারে ঘটছে ব্যাপক পতন। সারা বিশ্বে বড় বড় কোম্পানির আয় হ্রাস হয়েছে। ঠিক এই আবহেই ভারতে (India) উল্টো ছবি পরিলক্ষিত হয়েছে। সম্প্রতি মুডি’স ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে আস্থা প্রকাশ করেছে। মুডি’স অনুমান করেছে যে, ২০২৫ সালের তুলনায় ২০২৬-এর অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধি ভালো হতে পারে। মুডি’স জানিয়েছে, দেশের অর্থমন্ত্রী ব্যক্তিগত আয়করে যেভাবে ছাড় দিয়েছেন তাতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হতে পারে।
এগিয়ে চলেছে ভারত (India):
মন্দা কাটিয়ে উঠতে প্রস্তুত ভারত: বুধবার প্রকাশিত মুডি’সের ফ্রেশ ব্যাঙ্কিং সিস্টেম আউটলুক – ইন্ডিয়া রিপোর্টে মুডি’স রেটিং বলেছে যে, ভারতের (India) প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধি ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবর্ষে ৬.৫ শতাংশেরও বেশি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সংস্থাটি এই বৃদ্ধির জন্য সরকারী মূলধন বৃদ্ধি, কর হ্রাস এবং সুদের হারের হ্রাসকে দায়ী করেছে। মুডি’স রিপোর্ট জোর দিয়েছে যে, ভারতের অর্থনীতি চক্রাকার মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার হতে প্রস্তুত। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কেন্দ্রীয় বাজেটে কর ছাড়ের বিষয়টি সামগ্রিকভাবে খরচ বাড়াবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক সম্প্রসারণে অবদান রাখবে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।
জিডিপি কত হতে পারে: সরকারি ব্যয় এবং আর্থিক ত্রাণ GDP বৃদ্ধিকে সমর্থন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুডি’স ২০২৬ অর্থবর্ষে প্রকৃত GDP সম্প্রসারণ ৬.৫ শতাংশে অনুমান করছে। যা ২০২৫ অর্থবর্ষে-এ ৬.৩ শতাংশ থেকে বেড়েছে। অর্থ মন্ত্রকের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় আগামী অর্থবর্ষে জিডিপি পবৃদ্ধির হার ৬.৩ শতাংশ থেকে ৬.৮ শতাংশ হতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে। যেখানে সরকারি হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরে ৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। ২০২৪-এর জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ভারতের (India) প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধি ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। যা পরবর্তী ত্রৈমাসিকে ৬.২ শতাংশে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: শত্রুদের আর নেই রেহাই! আকাশে আরও শক্তিশালী হচ্ছে ভারত, বায়ুসেনা নিচ্ছে এই বড় পদক্ষেপ
ব্যাঙ্কিং সেক্টরের জন্য অনুমান: মুডি’স ভারতের (India) ব্যাঙ্কিং সেক্টরের জন্য একটি টেবিল আউটলুক বজায় রেখেছে তারা জানিয়েছে যে, অপারেটিং এনভায়রনমেন্ট অনুকূল থাকবে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য সংস্কারের পরে অ্যাসেট কোয়ালিটি কিছুটা খারাপ হতে পারে। আনসেফ রিটেল লোন, মাইক্রোফাইনান্স এবং স্মল বিজনেস লোনে চাপ প্রত্যাশিত রয়েছে। তবে, নামমাত্র হার কমানো সত্ত্বেও, নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন (NIM) সামান্য হ্রাসের সাথে ব্যাঙ্কগুলির মুনাফা পর্যাপ্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২২ এবং ২০২৪-এর মার্চের মধ্যে গড়ে ১৭ শতাংশের তুলনায় ২০২৬ অর্থবর্ষে ব্যাঙ্কিং সেক্টরে ঋণের বৃদ্ধি ১১ থেকে ১৩ শতাংশ কম হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: IPL-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এবার বিরাট চমক, তারকাদের ভিড় কলকাতায়! জানুন বিস্তারিত
মুদ্রাস্ফীতি এবং মনিটারি পলিসির ওপর অনুমান: মুডি’স আরও জানিয়েছে যে, ভারতের (India) গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ২০২৬ অর্থবর্ষে ৪.৫ শতাংশে নেমে আসবে। যা গত অর্থবর্ষে ৪.৮ শতাংশ ছিল। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২০২২ সালের মে মাস থেকে ২০২৩-এর ফেব্রুয়ারির মধ্যে তার পলিসি রেট ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। পরবর্তীতে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তার পলিসি রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬.২৫ শতাংশ করে। মার্কিন বাণিজ্য নীতির সম্ভাব্য পরিবর্তন এবং মুদ্রা বাজারের অস্থিরতা সহ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার উল্লেখ করে রেটিং এজেন্সি আরও রেট কমানোর আশা করছে। মুডি’স বলেছে যে ২০২৪ সালের শেষের দিকে এবং ২০২৫ সালের প্রথম দিকে উদীয়মান বাজারের কারেন্সির বিপরীতে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হওয়ার জেরে এটা অনুমান করা হচ্ছে যে, RBI রেট কমানোর বিষয়ে আরও সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করতে পারে।